সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, সরকার সবার জন্য পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চায়। এ জন্য কাজ শুরু হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন চালুর ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অর্থ সংস্থানের কথাও ভাবা হচ্ছে।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ইন্ট্রোডিউসিং অ্যা ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম ইন বাংলাদেশ : ইন সার্চ অব অ্যা ফ্রেমওয়ার্ক’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশ। সংলাপে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ চালু করার সুযোগ, প্রয়োজনীয় নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ নিয়ে আলোচনা হয়।
এম এ মান্নান বলেন, আমার জানা মতে, অর্থমন্ত্রণালয়ের ভেতরে ছোট একটি সেল আছে, যারা সবার জন্য পেনশন চালুর বিষয়ে প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।
বক্তব্যে সর্বজনীন পেনশন কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, অন্য দেশগুলো কীভাবে এটা চালাচ্ছে, অর্থের সংস্থান কীভাবে করা যায়, আয়োজকদের কাছে এ ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক পরামর্শ চান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এসময় তিনি সর্বজনীন পেনশন চালুর ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত অর্থ সংস্থানের প্রস্তাবও করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সবাই এখানে অংশ নিতে পারবে না। আমাদের এখনও ১১-১২ শতাংশ মানুষ আছে, যাদের আমরা হতদরিদ্র বলি। যাদের কোনও নিট আয় নাই। আমাদের রাজনৈতিক শক্তির প্রথম টার্গেট ওই নিচের ১১-১২ ভাগ মানুষকে টেনে ওপরে আনা। তারা কন্ট্রিবিউট করতে পারবে না, তাই আসতে পারবে না, সেই ধরনের চিন্তায় আমরা যাবো না।
মন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব দেশের জনগণের জন্য ভাত কাপড়ের ব্যবস্থা করা এবং আমাদের সরকার সেটি করেছে। আমাদের সরকার ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন মাথাপিছু ১০০ টাকা ভাতা দিয়ে কল্যাণমুখী কাজ শুরু করেছিল। এবার ক্ষমতায় আসার পর এটি এক্সপান্ড করেছে। ৬০ শতাংশ মানুষকে আমরা এই সেবা দিচ্ছি। বেশিরভাগ এলাকা কাভার করেছি। এক-তৃতীয়াংশ বাকি আছে, সেটিও আমরা কাভার করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ নিয়ে এসেছি, সাক্ষরতার হার প্রায় আশির কোটায় পৌঁছেছি। আমরা মানুষের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছি ক্লিনিকের মাধ্যমে। আমরা শিশুদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই দিচ্ছি এবং আগামী বছর থেকে দুপুরের খাবারের সংস্থানের জন্য কাজ শুরু করেছি। আমাদের সরকার পেনশন স্কিমের রাষ্ট্রীয় কাজটি স¤পন্ন করবে। আমরা পেনশন স্কিম ৫শ টাকা করে দিচ্ছি। বাড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। তবে এটি বাড়ানোর ফলে এর উদ্যোগ যাতে ব্যাহত না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সংলাপে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় স¤পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য একটি ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ চালু করার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।
সংলাপে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।