সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হাওর অঞ্চলে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবং সার্বিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রাথমিক পর্যায়ে হাওর অঞ্চলে কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি নিরসনের লক্ষ্যে কৃষি বীমা চালু করছে সরকার।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্র বীমা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বীমা কোম্পানির মালিকদের প্রতি মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। বীমাশিল্পকে মানবিক কল্যাণে কাজে লাগাবেন বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, উৎপাদন এবং অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে বীমা কোম্পানিগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ব্যক্তি, পরিবার এবং প্রাতিষ্ঠানিকখাতের অদৃশ্য ঝুঁকি হ্রাসে বীমাশিল্প সহায়তা করে। সম্ভাব্য ঝুঁকি কমিয়ে আর্থিক নিশ্চয়তা দেয়। জীবন ও স¤পত্তির ক্ষয়ক্ষতিতে নিরাপত্তা দেয়। পাশাপাশি দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগখাতের জন্য তহবিল সৃষ্টিতে সহায়তা করে। ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য বীমা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বীমাও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয়জনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশে বীমা ব্যবস্থার প্রয়োগ এখনও অপ্রতুল এবং এর প্রসার কাক্সিক্ষত মাত্রায় ঘটেনি। ফলে সামগ্রিকভাবে ক্ষতিপূরণ সম্ভবপর হলেও নি¤œ ও স্বল্পআয়ের জনগোষ্ঠী এবং প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, জলবায়ুজনিত ঝুঁকি মোকাবিলার জন্য বিশেষ ধরনের বীমা স্কিম এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এ ধরনের বীমা ব্যবস্থা একটি নতুন ধরনের পদক্ষেপ। এটি অল্প সংখ্যক দেশে চালু করা হয়েছে এবং কিছু কিছু দেশে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।
বীমা খাতের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে দারিদ্র্যের হার আমরা উল্লেখযোগ্য হারে কমাতে সক্ষম হয়েছি। এতে বীমাখাতেরও অবদান রয়েছে। কেননা বিমাখাত সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহের মাধ্যমে বিনিয়োগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে কর্মক্ষেত্র তৈরি হয় এবং দারিদ্র্য দূর হয়।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বীমা শিল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করে বর্তমান সরকার এই খাতের আধুনিকায়ন এবং উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
১৯৩৮ সালে প্রণীত বীমা আইনকে যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আমরা বীমা আইন ২০১০ চালু করেছি। একইসঙ্গে আগের কন্ট্রোলার অব ইন্স্যুরেন্স অধিদপ্তর অবলুপ্ত করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বা আইডিআরএ আইন ২০১০ প্রণয়ন করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
অন্তর্ভুক্তিমূলক বীমা নিশ্চিতের জন্য বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। তার কয়েকটি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।