1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওর অঞ্চলে শিশুদের বেড়ে ওঠা – প্রসঙ্গ পুষ্টিহীনতা : হাসান হামিদ

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৯

একটি শিশু যখন জন্ম নেয়, তখন তার এই গ্রহে বেড়ে ওঠার জন্য অন্য সব প্রয়োজনের থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় খাবার। এরপর নিরাপত্তা, শিক্ষা বা অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবা যেতে পারে। জাতিসংঘের শিশু সেবামূলক অঙ্গ সংস্থা ইউনিসেফ-এর একটি অনুবাদ প্রকল্পে ২০১৬ সালে আমি কিছুদিন কাজ করেছিলাম। সেই সময় এ সংক্রান্ত অনেকগুলো রিপোর্ট আমি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। একটা বিষয় জেনে ভালো লেগেছে যে, দারিদ্র্য হ্রাসে ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে আমাদের বাংলাদেশ। দারিদ্র্যের হার এখন আরও কমে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু সেই হারে শিশুদের পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি কি হয়েছে? কাগজে-কলমে যাই বলা হোক, বাস্তবতা খুব সুখের নয়। ঢাকা শহরে বস্তি এলাকায় বা রাস্তায় যেসব শিশু ঘুরে বেড়ায়, হাওরাঞ্চলে বা পার্বত্য এলাকায় যেসব শিশু বেড়ে ওঠছে তাদের স্বাস্থ্যের যে চিত্র আমরা দেখি, তা আহত করে আমাদের। অনেক প্রশ্নই উঁকি দেয়। আর এসব ভেবে যাদের মুখের ছবি চোখ বন্ধ করলেই মনে ভেসে ওঠে; তাদের শীর্ণ দেহই বলে দেয় অনেক প্রশ্নের উত্তর।
আমাদের দেশের এসব খর্ব ও শীর্ণকায় শিশুর চিত্র উঠে এসেছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন বাংলাদেশ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিটের (এফপিএমইউ) একটি রিপোর্ট-এ। তাদের গবেষণা বলছে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর ৩৬ শতাংশ এখনো খর্বকায়। আর শীর্ণকায় ১৪ শতাংশ শিশু। পাশাপাশি অপুষ্টির কারণে কম ওজন নিয়ে এদেশে জন্মগ্রহণ করছে ৩৩ শতাংশ শিশু। এদিকে দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৪১ শতাংশ শিশু এখনও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এছাড়া বিভিন্ন বয়সী ৭৩ শতাংশ নারীর রয়েছে জিঙ্ক স্বল্পতা। পাঁচ বছর বয়সী তিন শিশুর মধ্যে একজন খর্বাকৃতির। এই প্রতিবেদন থেকে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, সার্বিকভাবে অপুষ্টির ঝুঁকি থেকে এখনও বের হতে পারেনি বাংলাদেশ।
আর এ দেশের সবচেয়ে বেশি খর্বকায় শিশু রয়েছে হাওরে, সেই সাথে সেখানে অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হারও অন্য সব এলাকার চেয়ে বেশি। অবশ্য এর কারণটিও প্রায় নির্দিষ্ট। আর সেটি হলো এই অঞ্চলে ছয় মাস বন্যা থাকে। তবে একথা সত্য যে, হাওরাঞ্চলে শিশুদের পুষ্টি সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেটি কেন? কেউ কেউ মনে করেন, এখানকার সাধারণ মানুষের উপার্জন কম, তাই পুষ্টিযুক্ত খাদ্যের প্রাপ্যতা কম হওয়া স্বাভাবিক। আবার শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকার দরুণ অনেকেরই পুষ্টিজ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা নেই। তাই পুষ্টি স্বল্পতায় ভুগে এখানকার শিশু ও নারীরা।
আমি যতদূর জানি, আমাদের এই অঞ্চলে পুষ্টিকর অন্যসব খাদ্যের চেয়ে ভাতের ওপর মানুষ বেশি নির্ভরশীল। এছাড়া শিক্ষা, সচেতনতার অভাব এবং অনুন্নত যোগাযোগের কারণে গর্ভবতী মায়েরা সব সময় স্বাস্থ্যসেবা পান না হাওরে। সেখানে থাকেন না প্রয়োজন সংখ্যক ডাক্তার। সব মিলিয়ে অবস্থাটি আশার আলো কবে নাগাদ পেতে পারে, আন্দাজ করা কঠিন।
কিছুদিন আগেও শুনেছি, শিশু মায়ের পেটে এলে সেই মাকে দুধ, মাছ, মাংস কম খেতে দেয়া হতো যাতে বাচ্চার ওজন বেড়ে না যায়। অথচ আমরা জানি, শিশুর জন্মোত্তর পুষ্টির সঙ্গে তার জন্মপরবর্তী পুষ্টির ব্যাপারটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃগর্ভে শিশুর অবস্থানকালে মায়ের পুষ্টিই শিশুর পুষ্টি লাভের উৎস। গর্ভবতী মায়ের পুষ্টি লাভ ব্যাহত হলে তার গর্ভস্থ শিশুটিও এর প্রভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই গর্ভবতী মায়ের অপুষ্টি গর্ভস্থ শিশুর অপুষ্টির মূল কারণ। আয়োডিনের অভাব, কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ গর্ভবতী মায়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। আর পুষ্টিহীন প্রসূতি কম ওজনের শিশুর জন্ম দিতে পারে। তারপর পুষ্টিহীনতার ধারাবাহিক পর্ব শুরু হয়ে প্রজন্ম পর¤পরায় অব্যাহত থাকে এই ব্যাপারটি। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, পুষ্টিহীনতা নিয়ে জন্মগ্রহণকারী শিশুটি যখন জীবনের যাত্রা শুরু করে, তখন একটি ধারাবাহিক রুগ্ন অভিযাত্রার সূচনা হয়। তাই শিশুর অপুষ্টি সামগ্রিক উন্নয়নের পথে একটি বড় বাধা বোঝাই যাচ্ছে। আইসিডিডিআর ও ব্র্যাকের ‘স্কেলিং আপ নিউট্রিশন: অ্যান আরজেন্ট কল ফর কমিটমেন্ট অ্যান্ড মাল্টি-সেক্টরাল একশন’ শীর্ষক একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, উচ্চমাত্রার অপুষ্টির ঝুঁকিতে থাকা বিশ্বের ৩৬টি দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ৫১ শতাংশ শিশু এনিমিয়ায় (রক্তস্বল্পতা) ভুগছে। মায়েদের ক্ষেত্রে এ হার ৪২ শতাংশ। ব্যাপারটি নিয়ে আরও ভাবনা করার সময় এখনই। কেননা বড় এই সংখ্যাটিকে বাদ দিয়ে দেশের সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন সম্ভব নয়।
হাওরে স্বল্প ওজনের শিশু জন্মের হার বেড়ে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে সংরক্ষিত তথ্যেও। সেখানকার তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের এপ্রিলের বন্যার পর মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্ম নিয়েছে মোট ৩৯৯০টি শিশু। এর মধ্যে ২০০৭ জনই স্বল্প ওজনের। অর্থাৎ এই সময়ে শুধু হাসপাতালেই ৫০ শতাংশের বেশি শিশু স্বল্প ওজন নিয়ে জন্মেছে। এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসে জেলার সব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জন্মগ্রহণ করে মোট ২৯১০টি শিশু। এর মধ্যে কম ওজনের শিশুর সংখ্যা ছিল ১০৪৩ জন। অর্থাৎ এই ছয় মাসে জেলাটির হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুর ৩৫.৮৪ শতাংশ ছিল স্বল্প ওজনের। আর পিছিয়ে থাকা সুনামগঞ্জ জেলার শিশুজন্মের এ হারও স্বল্প ওজনের শিশুর জাতীয় হারের চেয়ে অনেক বেশি। ন্যাশনাল লো বার্থ ওয়েট সার্ভে অনুযায়ী, দেশে স্বল্প ওজনের শিশু জন্মের হার ২২.৬ শতাংশ।
ভাবলে খারাপ লাগে, পৃথিবীর অন্য সব দেশের তুলনায় খর্বকায় শিশু জন্মে আমাদের অবস্থার কথা জানলে। এ নিয়ে ব্র্যাক এবং তাদের আন্তর্জাতিক গবেষণা অংশীদার ল্যাভারেজিং এগ্রিকালচার ফর নিউট্রিশন ইন সাউথ এশিয়ার (লানসা) যৌথ পরিচালনায় একটি গবেষণা কাজ হয়েছিল। তাদের সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৩৭ শতাংশই খর্বকায়, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় সর্বোচ্চ। এই তালিকায় বাংলাদেশের পরেই রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, যেখানে ৩৬ শতাংশ শিশু খর্বকায়। তার মানে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকেও আমাদের দেশে অপুষ্টির হার বেশি। এই হলো বাস্তব অবস্থা! আসলে আমাদের কৃষি উৎপাদিত পণ্য কম, সেই সাথে দেশের অধিকাংশ চাষী মাত্র একটি ফসল ফলায়। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে দেশের ৯৯ শতাংশ জমিতে ধান চাষ হয় এবং শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে ধান ফলানো হয়। আর এদেশের অধিকাংশ কৃষক শুধু একটি ফসলের ওপর নির্ভরশীল, যা এখানকার পুষ্টির ঘাটতির একটি কারণ। ব্র্যাকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামীণ জনপদে শস্য ও খাদ্যবৈচিত্র্য এবং পুষ্টিমানের বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে স¤পর্কিত। দেখা গেছে, খাদ্যবৈচিত্র্য ও পুষ্টিমানের দিকে লক্ষ্য রেখে উৎপাদন বাড়ালে কম ওজনের জনসংখ্যার হার হ্রাস পেতে থাকে। তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে যেখানে খর্বকায় শিশুর সংখ্যা ৩০.৯ শতাংশ, সেখানে হাওর এলাকায় এই হার ৪৬.৬ শতাংশ। হাওরে কম ওজনের শিশুর হার ৪৪.৫ শতাংশ। অথচ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এই হার ৩৪.১ শতাংশ।
বলতে গেলে হাওরাঞ্চলের মানুষের পেশা মূলত কৃষিই। অবশ্য মাছ ধরেও জীবিকা নির্বাহ করেন অনেকে। আর প্রায় বছরই বন্যায় ফসলহানির পর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে এই পিছিয়ে পড়া জনপদে; অভাব নেমে আসে তাদের সংসারে; টান পড়ে জীবিকায়। এসব কারণেই পুষ্টি পরিস্থিতি তাই এ জেলায়ই সবচেয়ে বেশি নাজুক। চিকিৎসকদের মতে, জন্মগ্রহণের সময় আড়াই থেকে চার কেজি ওজনকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়। জন্মের পর নবজাতকের ওজন আড়াই কেজির কম হলে তাকে স্বল্প ওজনের শিশু বলে। স্বাভাবিক ওজনের শিশু জন্মদানে গর্ভাবস্থায় মায়েদের সাধারণ সময়ের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ অতিরিক্ত খাবারের প্রয়োজন হয়। আর সেই খাবার হতে হবে অবশ্যই পুষ্টিসমৃদ্ধ। অন্যথায় স্বল্প ওজনের শিশু জন্মের ঝুঁকি তৈরি হয়। আর ঠিক এই ঘটনাই ঘটছে এখানে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের পুষ্টি নিরাপত্তায় বায়োফরটিফাইড ক্রপের কোন বিকল্প নেই। আমাদের দেশের খাদ্য চাহিদার সিংহভাগই আসছে চাল থেকে। পুষ্টিসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবার সেভাবে গ্রহণ করতে পারছে না বেশিরভাগ মানুষ। একথা সহজেই অনুমেয়, খাদ্যতালিকায় বৈচিত্র্যের অভাব ও দরিদ্র পরিবারে খাদ্য সংকটের কারণে পুষ্টিহীনতার শিকার হচ্ছে এসব পরিবারের শিশুরা। এই চক্রে অপুষ্টির মধ্য দিয়েই বেড়ে উঠছে তারা।
সুনামগঞ্জের হাওর অঞ্চলে দারিদ্রতা, অপরিকল্পিত জনসংখ্যা ও সচেতনতার অভাবে দিন দিন বাড়ছে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা। হাওর অঞ্চলে আমার জন্ম হওয়ার সুবাদে এবং ছোটবেলায় সেখানে বেড়ে ওঠার দরুন আমি জানি, যে বয়সে একটা শিশু বই খাতা পেন্সিল নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা, দুরন্তপনা ও চঞ্চলতায় খেলার মাঠে মেতে উঠার কথা সেই বয়সে দারিদ্রতার কারণে এসব শিশুদের একটি বড় অংশ লেখাপড়া ছেড়ে পরিবারের হাল ধরে। জীবিকার সন্ধানে তাদের ছুটতে হয় জলে অথবা ডাঙ্গায়। এরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজে যোগ দেয়। আর একটু খবর নিলেই জানা যায়, হাওরাঞ্চলের শিশুদের একটি বড় অংশ ঘর গেরস্থালি কাজে, মাছ ধরার সহযোগী হিসেবে, রেস্তোরাঁ ও বাসা বাড়িতে কিংবা দোকানে কম মজুরিতে কাজ করে। এরা শেষমেশ বঞ্চিত হয় ন্যায্য মজুরি ও জীবন যাপনের যাবতীয় অধিকার থেকে। জাতিসংঘের শিশু সনদের অনেক অনুচ্ছেদ এখানে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে, আমার হাওরে।
স্বস্তির জায়গা হলো, অপুষ্টি নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ বর্তমান সরকারের আছে। কিন্তু তা খুবই অপ্রতুল অথবা এসব বাস্তবায়ন ও তদারকিতে সমন্বিত পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। আর তাই অবহেলিত এই অঞ্চলের শিশুদের পুষ্টিনিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের দেশে দরিদ্র মানুষ কমেছে। আসলে দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম একমাত্রিক হওয়ায় এটি বাস্তবায়ন সহজ হয়েছে। কিন্তু পুষ্টিনিরাপত্তা কার্যক্রমটিকে সরকারকে দেখতে হবে বহুমাত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে। পিছিয়ে পড়া জনপদে খাদ্যের প্রাপ্তি ও ক্রয়ক্ষমতার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য, খাদ্যাভ্যাস ও শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের বড় একটি সংখ্যাকে অনেকখানি পিছিয়ে দেশ কি উন্নয়নের মহাসড়কে ঠিকঠাক দৌড়াতে পারবে?
[লেখক : তরুণ কবি ও কলামিস্ট]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com