স্টাফ রিপোর্টার ::
তাহিরপুরে দুই ব্যবসায়ীর ৪০টি গরু ভারতীয় চোরাচালানের গবাদিপশু হিসেবে চিহ্নিত করে ৭ লক্ষ টাকায় বিক্রি দেওয়ায় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ভারপ্রাপ্ত) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার তাহিরপুর বিচারিক আদালতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসীর হাসানসহ ৭জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছেন গরু ব্যবসায়ী মামলার বাদী ধর্মপাশা উপজেলার বৌলাম গ্রামের শফিকুল ইসলাম।
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাহিরপুরের বিচারক শুভদীপ পাল মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইয়ে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছেন। (মামলা নং সিআর ১৭৪/১৯)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শুক্রবার মামলার বাদী বৌলাম গ্রামের শফিকুল ও ১ নং সাক্ষী সাজল ব্যবসায়ী হিসেবে ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানার মহেশখলা বাজার থেকে বিভিন্ন বিক্রেতার থেকে ৪০টি গরু ক্রয় করেন। গরুগুলো নিজ বাড়িতে নেওয়ার সময় টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌকাসহ রনচি ও রামসিংপুর গ্রামের আরশাদ মিয়া ও সেলিম নামের দুই ব্যক্তি নৌকাসহ গরুগুলো আটক করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় ২নং আসামির ভাই মনিরকে ফোনে বিষয়টি জানালে একজন দারোগাসহ ৩জন পুলিশ, আনসার ভিডিপির ৬জন সদস্য নৌকা নিয়ে গরুগুলোকে ট্যাকেরঘাট খনিজ প্রকল্পের রেস্ট হাউসে নিয়ে আসে। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসীর হাসানের নির্দেশে গরুগুলো নামিয়ে রেস্ট হাউসের মাঠে জড়ো করে রাখা হয়। এসময় গরুর মালিক শফিকুল বাজার থেকে গরু ক্রয়ের বৈধ কাগজপত্র দেখালেও পুলিশ বিষয়টি উড়িয়ে দেয়। সারাদিন বাদী-সাক্ষীকে বসিয়ে রেখে সন্ধ্যার দিকে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে গরুগুলো স্থানীয় স্বপন দাসের কাছে ৭ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়। দুই ব্যবসায়ী ৪০টি গরু ১০ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকায় স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয় করেন বলে জানা গেছে। গরু ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে ৪০টি গরু ক্রয়ের রশিদ আদালতে দাখিল করেছেন।
এদিকে, ভারতীয় চোরাচালানের গরু হিসেবে দুই ব্যবসায়ীর গরু নিলামে তোলা হলেও গরুর সাথে থাকা দুই মালিককে গ্রেফতার কিংবা গরু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত নৌকা জব্দ করা হয়নি।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার তাহিরপুর বিচারিক আদালতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন রনচি গ্রামের আরশাদুল, রামসিংপুর গ্রামের সেলিম, মনির, আনসার ক্যাম্পের পিসি কাজল, ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মোসা, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসীর হাসান, সূর্য্যরেগাঁও গ্রামের স্বপন দাস।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ৭জনের নামোল্লেখসহ ৭-৮জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।