সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, উন্নয়নখাতে বরাদ্দের টাকার মালিক দেশের জনগণ। এসব টাকার হিসাব জনগণকে দিতে হবে। আমরা উন্নয়নের বরাদ্দকৃত টাকার যথাযথ ব্যবহার চাই। বালিশ, পর্দা ও বদনা দুর্নীতির মতো কলঙ্ক নিতে চাই না।
শনিবার দুপুরে সিলেটের কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, জনগণ এখন খুবই সচেতন। তারা দুর্নীতি ধরার জন্য আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। আর প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহ একটি সুন্দর দেশ গড়া। এজন্য সব সেক্টরে বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার চান তিনি। আমাদেরও সেভাবেই সব কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন, যারা প্রকল্প বানাবেন, তারা আইটেমগুলো ভিন্নভাবে যাচাই করে বানাবেন। তাতে দুর্নীতি কমে আসবে। এতসব করার পরও যারা দুর্নীতি করবে, তারা ঝুঁকি নিয়ে করবে। আর প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমরা সচেতন আছি দুর্নীতি বিরোধী সংগ্রাম চালিয়ে যাবো।
ট্রাক টার্মিনাল সম্প্রসারণ প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে ট্রাক টার্মিনাল সম্প্রসারণ করা হবে। তবে কয়েক মাস এর ব্যবহার দেখবো আমরা। যাদের জন্য জনগণের টাকায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে, তারা যদি এর সঠিক ব্যবহার না করে রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখে, তাতে সম্প্রসারণ করে কী লাভ?
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ২৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮ দশমিক ৪৪ একর জায়গার মধ্যে ট্রাক টার্মিনাল নির্মিত হয়েছে। টার্মিনালটি ১০ মাসের জন্য ৩০ লাখ টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। এখানে চালকদের সুবিধার্থে ক্যাফটেরিয়া খোলা হবে। চালকদের বিশ্রামের জন্য থাকছে যাবতীয় সুবিধা। এছাড়া একটি পেট্রল পাম্পও নির্মাণ করা হবে।
অপরদিকে শনিবার সিলেট সদরে সিলেট সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই যে মাঝে মাঝে খবরের কাগজে দেখেন, বালিশের দাম এত হাজার টাকা, বদনা-লোটার দাম
এত হাজার টাকা, নিচতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত যেতে এত টাকা লাগে- এ ধরনের কলঙ্কজনক কাজ যেন আমাদের এখানে না হয়। তিনি বলেন, সব মানুষ দেখে ও বোঝে। তারা আমাদের পিঠে দাঁড়িয়ে আছে। এটা মনে রেখে আমাদের ব্যয় করতে হবে। ক্রয়ের সঙ্গে জড়িত সবাইকে কেনাকাটা ও খরচে হিসাবি হওয়ারও আহ্বান জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এম এ মান্নান বলেন, সরকার উন্মুখ হয়ে, রেডি হয়ে বসে আছে। সরকারকে বেশি তদবির করার প্রয়োজন হবে না। ভালো প্রকল্প নিয়ে আসবেন, বুঝিয়ে বলবেন, আপনাদের প্রকল্প দ্রুত পাস করা হবে। টাকার অবস্থা আমাদের খুব ভালো। টাকারও সংস্থান করতে পারব। শর্ত শুধু একটাই, এই টাকাকে যথাযথভাবে ব্যয় করতে হবে। প্রতিটি টাকার হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। অডিট নিরীক্ষা করতে হবে। এটা জনগণের টাকা, সার্বিকভাবে এটা মাথায় রাখতে হবে। এই টাকার মালিক বাংলাদেশের সব মানুষ। এই টাকার হিসাব বাংলাদেশের মানুষের সামনে দিতে হবে- যোগ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, সিলেট শহরের শর্ত শুধু একটাই, কাজগুলো হতে হবে জনগণের কল্যাণের জন্য। সাধারণ মানুষের জন্য, খেটে খাওয়া মানুষ যারা শহরে বসবাস করে তাদের কল্যাণের জন্য – এ ধরনের যত প্রকল্প আসবে আমি বিনা প্রশ্নে পাস করিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করব।