1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

পরিচ্ছন্নতার নয়, সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন চাই

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

অদ্ভুত একটি সংবাদ। সিলেটে সুরমার তীর পরিচ্ছন্ন করতে এসেছেন ব্রিটিশ এমপিরা। সংবাদে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ নামে ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল ‘ক্লিন সুরমা ক্লিন সিলেট’ প্রকল্পের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিয়েছেন। সোমবার দুপুরে সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাট এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেন ব্রিটিশ এমপিসহ ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
হৃদয়ঙ্গম হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে না, সহজেই বোধগম্য হচ্ছে যে, কথিত ‘দ্বিতীয় লন্ডন ছিলট’কে ইতোমধ্যে এতোটাই ময়লানোংরা করে ফেলা হয়েছে যে, বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে না হলেও, কারও কারও বিবেচনায় বোধ করি ‘নোংরা পরিবেষ্টিত হয়ে থাকা যাচ্ছে না’ গোছের অসহ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই ‘কারও কারও’রা শহরের আবাসিকতার পরিচ্ছন্নতার প্রসঙ্গটিকে জোর দিয়ে তাঁদের পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম পরিচালিত করছেন বটে, কিন্তু অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে বসয়ীদের মনোজগতের পরিবেশের অপরিচ্ছন্নতাকে পরিচ্ছন্ন করতে কোনও কার্যক্রম গ্রহণ করছেন না। মানুষের মনোজগতে যে নোংরা লেগে আছে সে-নোংরা সাফ করার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘এখনকার তরুণ সমাজ পরিবেশ রক্ষায় যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা আসলেই দৃষ্টান্ত স্বরূপ। আমরাও তাদের সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে অংশ নিতে পেরে গর্বিত।’ সিলেটে তরুণরা শহরের আনাচে-কানাচের ময়লা পরিষ্কার করে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নিয়োজিত আছেন। আর এদিকে শত শত তরুণরা অপরিকল্পিত উপায়ে টাঙ্গুয়ায় বেড়াতে গিয়ে টাঙ্গুয়ার পরিবেশকে দূষিত করে তোলে প্রকারান্তরে দেশের জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্যতাকে বিনাশের পথ প্রশস্ত করছেন।
যে-যাই বলুন, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন সাংস্কৃতিক পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনের সামগ্রিক সফলতা ব্যতিরেকে কোনও দিনই সফল হবে না। মানুষের চেতনার পরিবর্তন চাই আগে। চাই নতুন মানুষ, নতুন সমাজ। তা হলেই প্রতিটি জনপদ পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে। সমাজের ভেতরে যদি চোর, বাটপার, প্রতারক, জোচ্চুর, ধর্ষক, খুনি, ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, ভণ্ডবুদ্ধিজীবী, স্বার্থান্বেষী রাজনীতিবিদ, অসৎ আমলা-বণিকের প্রাধান্য থাকে এবং সমাজটা যদি একটি কেবল মুনাফানির্ভর নোংরা আর্থনীতিক ব্যবস্থার অধীনে চলে, তবে সে-সমাজের বাসভূমি প্রাকৃতিক ও মানসিক দু’দিক থেকেই নোংরা থাকবে, পরিচ্ছন্ন থাকবে না। এইটুকু জানা ও বুঝার পর এইসব নোংরামির বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতার কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে, কিন্তু নির্মূল করার সামাজিক কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না এবং এতে করে কাজের কাজ কীছুই হবে না। শোভন-রব্বানীকে পদচ্যুত করা হবে কিন্তু বিচার করে শাস্তি দেওয়া হবে না। এভাবে সমাজে কোনও প্রগতিশীল পরিবর্তন সূচিত হবে না। চোর জেল থেকে বেরিয়ে আবার চুরি করতে লেগে গিয়ে পুরনো পেশায় ফিরে যাবে। সমাজ পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে না কোনও দিনই।
অনন্তর ‘কী করিতে হইবে?’ এই অনিবার্য প্রশ্নের উত্তরে নিরুত্তর থাকাই আপাতত উত্তম। কেবল বলি : পরিচ্ছন্নতার আন্দোলন নয়, সমাজটাকে পরিবর্তন করার আন্দোলন চাই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com