1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

হাওরের জীবন জীবিকা বিষয়ক সংলাপ : হাওর বাজেটের মাধ্যমে সুষম উন্নয়নের দাবি

  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৯

বিশেষ প্রতিনিধি ::
ভূপ্রাকৃতিক বিবেচনায় হাওরের উন্নয়নে আলাদা পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়ন অবকাঠামো বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন হাওরবাসী। হাওরাঞ্চলের সাত জেলা নিয়ে হাওরাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদ গঠন করে ও হাওর বাজেটের মাধ্যমে এই অঞ্চলের সুষম উন্নয়নের দাবি জানান তারা। হাওরের প্রধান সম্পদ ধান, মাছ, পাথর আহরণেও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, ফসলরক্ষায় স্থায়ী বাঁধের বদলে নদী ও খাল খনন করে ফসলরক্ষার কথা বলেন অংশগ্রহণকারীরা। তাছাড়া ২০ একরের নিচের হাওরের সকল জলমহাল ইজারা প্রথা বন্ধ করে উন্মুক্ত প্রক্রিয়ায় হাওরবাসীকে মাছ ধরার সুযোগ প্রদান এবং বর্ষাকালীন প্রায় ৪-৮ মাস কর্মহীন কৃষক-মৎস্যজীবীদের ভিজিডির আওতায় নিয়ে এসে মৎস্য সম্পদ রক্ষার কথা বলেন।
হাওর অঞ্চলের জীবন-জীবিকা : সরকারি পরিষেবার ভূমিকা শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন হাওরাঞ্চলের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শনিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত শহরের পানসি রেস্টুরেন্ট হলরুমে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দাতা সংস্থা অক্সফাম ইন বাংলাদেশ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, ছাত্র, জনপ্রতিনিধি, কৃষক, রাজনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নিয়ে নিজস্ব মতামত তুলে ধরেন। বক্তারা উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধেরও দাবি জানান। তাছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা বলেন, হাওরাঞ্চল পাহাড়, সমতল ও নিচু ভূমি নিয়ে গঠিত। কিন্তু এই অঞ্চলের ভিন্ন বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় না নিয়ে সাধারণত এককেন্দ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। হাওর অঞ্চলের জীবন জীবিকার উন্নয়নের জন্য পৃথক পরিকল্পনা প্রয়োজন। প্রয়োজনে পার্বত্যাঞ্চলের মতো সাত হাওর জেলা নিয়ে হাওর উন্নয়ন পরিষদ গঠন করতে হবে। হাওরের বিশাল নারী গোষ্ঠীকে কর্মপ্রক্রিয়ায় নিয়ে আসতে হাওরের প্রতিটি গ্রামে সমবায়ের মাধ্যমে নারী সেবা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনেরও পরামর্শ দেন। অধিকাংশ বক্তাই হাওরের কৃষি ও মৎস্য উন্নয়নে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে বলেন, সরকার বিল খনন, মৎস্যচাষ ও হাওরের বাঁধ রক্ষায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা দিলেও দুর্নীতি থামানো যাচ্ছেনা। যাচ্ছেতাইভাবে প্রকল্প শেষ করে বরাদ্দ নয়ছয় করা হচ্ছে। হাওরের স্থায়ী বাঁধের বদলে নদ নদী খনন করে দিলে হাওরের কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল সুরক্ষিত হবে। হাওরের বোরো ফসল তোলার পর বিশাল কর্মহীন জনগোষ্ঠীকে ৪-৮ মাসের জন্য ভিজিডির আওতায় নিয়ে আসলে হাওরের মৎস্যসম্পদ সুরক্ষা হবে বলে অভিমত দেন বক্তারা। তাছাড়া মওসুমে ধান কাটা হওয়ার পরই হয়রানিমুক্ত পরিবেশে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধানসংগ্রহের দাবি জানানো হয়।
সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রিডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত, নারীনেত্রী শীলা রায়, স্যানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক তপন রুরাম প্রমুখ।
সংলাপে অংশগ্রহণকারী পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম, সদর উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, সাংবাদিক পংকজ কান্তি দে, শামস শামীম, এমরানুল হক চৌধুরী, মাহতাব উদ্দিন তালুকদার, আসকের সভাপতি মো. ফজলুল হক, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম, বাবরুল হাসান বাবলু, ইউপি সদস্য মতিউর রহমান মতি, সালেহিন চৌধুরী শুভ, গৌরী ভট্টাচার্য, নিপা হাজং প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন সংলাপে।
সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি টেকসই জীবিকা কাঠামো এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি)-এর সম্পৃক্ততা, টেকসই জীবিকা কাঠামোতে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। বন্যা ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বোরো ফসলের ক্ষেত্রে জাতীয়ভাবে মোট ক্ষতির ৫০ শতাংশের বেশী হয় সুনামগঞ্জে। এক্ষেত্রে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাঠ পর্যায়ের ত্রাণ বিতরণ কর্মী এবং জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কমিটি গঠন করে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান তিনি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে জাতীয় পর্যায়ের বাইরেও হাওর অঞ্চলের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে, যেসকল জাতীয় ও স্থানীয় পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের প্রতি সরকারের মনোযোগী হতে হবে। আর এসকল কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে জনসম্পৃক্ততা কার্যকরভাবে বৃদ্ধি করতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com