বিশেষ প্রতিনিধি ::
জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণ বন্ধ থাকায় নদ-নদীর পানি কমেছে। সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় বিপদসীমার ৬৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়া সীমান্ত নদী যাদুকাটার পানিও বিপদসীমার নিচে বইছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৯ মি.মি.। মঙ্গলবার প্রায় ৮দিন পর সূর্যের দেখা পান জেলাবাসী। ৮ দিন ধরে টানা পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে জেলার ১১ উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ঘরবাড়ি, হাটবাজার, গবাদিপশুসহ ক্ষতি হয়েছে রাস্তাঘাটের। আজ বুধবার পানিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক একেএম এনামুল হক শামীম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান তিনটি উপজেলার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করবেন। তারা দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণসহ বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যাকবলিত এলাকায় ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল ২২টি। তবে মঙ্গলবার ঢল ও বর্ষণ বন্ধ থাকায় পানি কমেছে। এতে সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ২২টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোও বুধবার ফিরে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্রথম দফা ত্রাণ বিতরণ শেষে দ্বিতীয় দফার ত্রাণও সংশ্লিষ্ট উপজেলায় বরাদ্দ শেষ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় এখনো কন্ট্রোল রুম খোলা আছে। আজ বুধবার বন্যাক্রান্ত উপজেলা ছাতক, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুরের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করবেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। তারা বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়সহ সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর ও ছাতকে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন। বিকেলে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন।
এদিকে জেলার ১১ উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে বলে বন্যাক্রান্তরা জানিয়েছেন। এসব এলাকায় জ্বর, সর্দি কাশিসহ পেটের পীড়ায় ভোগছেন লোকজন। রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় তারা স্বাভাবিক চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তাছাড়া গ্রামীণ বাজারগুলোতেও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল বৃদ্ধি পেয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল হক বলেন, প্রথম দফা ত্রাণ বিতরণ শেষে এখন দ্বিতীয় দফা ত্রাণের বরাদ্দ বণ্টন করা হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ পাচ্ছেন। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মাননীয় উপমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আজ পরিদর্শন করে প্লাবিত কয়েকটি এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করবেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিক ভূইয়া বলেন, সুরমা নদীর পানি কমলেও এখনো ৬৫ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ঢল ও বর্ষণ কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।