মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুর থেকে সিলেটের মাত্র ১৩ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশার কারণে জনভোগান্তির শেষ নেই। দিনেদিনে ভাঙাচোরা সড়কের অবস্থা আরো বেহাল হচ্ছে। বর্তমানে এ সড়ক যান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় এ সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যে কারণে দ্রুত সড়কের মেরামত কাজের দাবিতে ফুঁসে উঠছেন জনতা।
জানাগেছে, জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কের জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ি বাজার পর্যন্ত মাত্র ১৩ কিলোমিটার সড়কের নাজুক দশায় দীর্ঘদিন ধরে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হয়ে আসছেন সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে বারবার গণমাধ্যমে শিরোনাম হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। এতে ভুক্তভোগী মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দিনদিন বেড়ে চলেছে। যে কোন সময় কঠোর আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামতে পারেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ি বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অধিকাংশ সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের পিচ ঢালাই উঠে গিয়ে বড়-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে সড়কের অনেক স্থানে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচল করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও পুরো সড়ক ভেঙে গেছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সড়কটির বেহাল দশার কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর মিনিবাস শ্রমিক সমিতির সাবেক সভাপতি রাব্বানী মিয়া বলেন, এ সড়কটির বেহাল দশার কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছি আমরা। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে প্রতিদিন গাড়িতে মেরামত কাজ করাতে হচ্ছে। গাড়ির যন্ত্রপাতিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে যায়। আবার ঘনঘন দুর্ঘটনাও ঘটছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সড়কে দ্রুত কাজ না হলে যে কোন সময় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর গাড়ি চলাচল বন্ধ হলে জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে মানুষ আরো বেশি কষ্ট পাবেন।
উপজেলার মিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) জমির উদ্দিন বলেন, সড়কটির বেহাল দশার কারণে মানুষের কষ্টের শেষ নেই। অচিরেই সড়কে কাজ না হলে আন্দোলনে নামতে পারেন সাধারণ মানুষ।
জগন্নাথপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র শফিকুল হক বলেন, এ সড়কের করুণ অবস্থার কারণে মানুষ চলাচল করতে পারছেন না। এতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই জনস্বার্থে দ্রুত সড়কের কাজ করতে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানান।
জগন্নাথপুর উপজেলা আ.লীগের সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ূম বলেন, জনভোগান্তি লাঘবে এ সড়কে দ্রত কাজ করাতে হবে। শুধু তাই নয়, টেকসই দীর্ঘমেয়াদী কাজ করাতে হবে। তা না হলে কিছুদিন পর আবারো ভেঙে যাবে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গোলাম সারোয়ার বলেন, জগন্নাথপুর থেকে কেউনবাড়ি বাজার পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজের জন্য ২০ কোটি টাকার কাজ অনুমোদন হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ আসলেই সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কাজ শুরু হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে কাজ শুরু হতে পারে।