সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বেকারত্বের কারণে তরুণদের শিক্ষায় আগ্রহ কমছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আয়োজনে ‘আন্তর্জাতিক মানদ-ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় ও ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজকে বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার যেভাবে বাড়ছে সেই বৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যাপারে আগ্রহী করে না। শিক্ষার্থীরা সিভিল সার্ভিসে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে। তার কারণ হচ্ছে, তার জন্য চাকরি হচ্ছে খুব জরুরি। কাজেই শিক্ষার এই সমস্যাকে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা করতে পারব না। আমাদের দেখতে হবে গোটা আর্থ-সামাজিক অবস্থাটা কী। এইখানে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ কী? এইটা এক নম্বর কথা। দ্বিতীয়ত আমাদের সমাজে জ্ঞানের গুরুত্ব কমে গেছে। জ্ঞান দরকার হয় না, জ্ঞান ছাড়াই অনেক কাজ করা যায়। সেই ক্ষেত্রে জ্ঞানের যদি মর্যাদা না থাকে সমাজে তাহলে শিক্ষার আগ্রহ কেমন করে বাড়বে, শিক্ষার মান কেমন করে বাড়বে?
শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, জাতীয় বাজেটের শতকরা অন্তত ২০ ভাগ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা উচিত। এটি খুবই যুক্তসঙ্গত দাবি এবং আমাদের জিডিপির অন্তত দুই ভাগ শিক্ষাখাতে দেওয়া উচিত। এগুলো না বাড়ালে আমরা শিক্ষার মান বাড়াতে পারব না।
সম্প্রতি টাইমস হায়ার এডুকেশনের র্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এই র্যাংকিং কীভাবে হয়েছে সেটা আমরা নিশ্চিত জানি না। আমরা সব তথ্য সরবরাহ করতে পেরেছি কি না জানি না। টাইমস হায়ার এডুকেশনের র্যাংকিংয়ে গবেষণার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, আবার অন্য একটিতে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস রুমের শিক্ষা এবং শিক্ষকদের গবেষণা এই দুটি জিনিসই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
নিজেদের ঘাটতির জায়গা চিহ্নিত করে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা যদি গবেষণা না করি তাহলে কি জ্ঞান সরবরাহ করব? কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং তার মূল কাজ হচ্ছে শিক্ষা দান। এই শিক্ষা দানের বিষয়টি যদি আমরা দেখি তাহলে আমার নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, সমস্যাটা অনেক। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যাপারে আগ্রহ কমেছে। এইটা খুব জরুরি যে, কেবল শিক্ষা দিলে হবে না দেখতে হবে যে ছেলে-মেয়েরা সেই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে কি না।