1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

রমজানুল মোবারকের ফাজাইল ও মাছাইল : মাও. কাজী মো. শাহেদ আলী

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৫ মে, ২০১৯

পবিত্র রমজানুল মোবারক আরবী হিজরি সনের নবম মাস। মহান আল্লাহপাক মানুষের ওপর রোজাকে ফরজ করেছেন। পবিত্র কোরআন শরিফে ছুবায়ে বাকারা আয়াত নং ১৮৫, অর্থ : মহান আল্লাহপাক এরশাদ করেন, রমজান মাস হল সে মাস, যে মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথযাত্রীদের জন্য সুস্পষ্ট পথ নির্দেশক আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী রূপে। একজন প্রকৃত মুমিন মুসলমান সংশোধন, আত্ম পরিশুদ্ধি তাকওয়া অর্জন করতে হলে রোজার দ্বারাই করা সম্ভব ও সক্ষম। কারণ রোজার বদলা পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহপাক তার নিজ কুদরতের হাতে প্রদান করবেন। তাই পবিত্র রমজান মাসের রোজা আমাদের জন্য অত্যন্ত বরকতময়।
রমজান শব্দটি রামজুন শব্দ থেকে নির্গত। এর অর্থ পুড়িয়ে ফেলা। রোজা রাখলে গোনাহ মাফ হয়। রমজান গোনাহকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাই করে দেয় তাই এ মাসের নাম রমজান বলা হয়। গুনিয়াতুত তালিবীন কিতাবে বর্ণনায় রমজান শব্দটিতে পাঁচটি অক্ষর আছে। প্রতি অক্ষরে একটি অর্থ বহন করে যথা:- “রা” অক্ষরটির দ্বারা রেদওয়ানুল্লাহ বা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি, “মীম” অক্ষরটি দ্বারা মাগফিরাতাল্লাহ অর্থ আল্লাহর ক্ষমা প্রদর্শন করা বুঝায়; “দোয়াদ” অক্ষর দ্বারা দ্বিমানুল্লাহ অর্থ উলফাতুল্লাহ বা আল্লাহর প্রেম ভালবাসা বুঝায় এবং “নুন” অক্ষর দ্বারা নিয়ামাতুল্লাহ বা আল্লাহর নিয়ামত ও ইহসান সমূহ বুঝায়। উল্লেখিত মাসের রোজার বদৌলতে উপরে বর্ণিত পাঁচটি বিশিষ্ট গুণসমূহ একমাত্র রোজাদারগণের জন্যই নসীব হয়।
রোজা তিন প্রকার যথা:- রমজানুল মোবারকের রোজা এবং তাহার কাজা কাফফারা রোজা – ফরজ। ওয়াজিব রোজা যথা- মান্নত ইত্যাদির জন্য যাহা রাখা হয় নফল রোজা যথা- ফরজ ওয়াজিব ব্যতিত অন্যান্য সকল রোজাই নফল রোজা। যেমন শাওয়াল চাঁদের ছয় রোজা, প্রত্যেক চাঁদের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখের রোজা মহরম চাঁদের পহেলা তারিখ হইতে দশ তারিখ পর্যন্ত রোজাসমূহ, শবে বরাতের রোজা ইত্যাদি নফল রোজা। রোজা ভঙ্গের প্রধান প্রধান কারণ সমূহ-
১. ইচ্ছাপূর্বক পানাহার বা স্ত্রী সঙ্গম করা। ২. গুহ্যদ্বারে পিচকারী লওয়া। ৩. যে কোন অখাদ্য জিনিস হোক না কেন খাইয়া বা গিলিয়া ফেলা। ৪. স্বেচ্ছায় ঔষধ সেবন করা। ৬. কেহ বলা পূর্বক কিছু খাওয়াইয়া দেওয়া। ৭. তামাক বা বিড়ি-সিগারেটের ধোয়া ইচ্ছাপূর্বক গিলিয়া ফেলা বা কেহ গলার মধ্যে প্রবেশ করাইয়া দেওয়া। ৮. ইচ্ছাপূর্বক মুখ ভরিয়া বমি করা। ৯. সূর্যাস্ত হইয়াছে মনে করিয়া বেলা থাকিতে ইফতার করা।
যে যে কারণে রোজা ভঙ্গ করা যায়-
রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা হইলে (ধার্মিক চিকিৎসকের পরামর্শনুযায়ী), মোসাফির অবস্থায়, খুব বেশি ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মৃত্যুর আশঙ্কা হইলে, মা সন্তানকে দুধ দিলে যদি দুগ্ধাভাবে সন্তানের (যদি প্রাণনাশের আশঙ্কা ঘটে) গর্ভের সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা হইলে, বার্ধক্যের কারণে অত্যন্ত কমজোর হইয়া পড়িলে।
রোজার কাফফারা আদায়ের পদ্ধতি-
ইচ্ছাপূর্বক কেহ যদি একটি রোজা ভঙ্গ করে তার জন্য একাধারে দুই মাস রোজা রাখতে হবে এবং তা বিরামহীনভাবে আদায় করতে হবে। যদি কাফফারা রোজা আদায়ে অক্ষম হয় তবে ৬০ জন মিসকিনকে দু’বেলা পেট ভরে আহার করাতে হবে।
ফিদিয়ার বিধান-
যদি কোন ব্যক্তি বয়সের ভারে জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে শারীরিক শক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে, বৃদ্ধি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই অথবা এরূপ রোগে আক্রান্ত হয় এবং শরিয়ত সমর্থিত কোন ওজর পাওয়া যায়, রোগ ভাল হওয়ার তেমন কোন সম্ভাবনাও নেই এক্ষেত্রে তার বয়স যাই হোক না কেন এরূপ ব্যক্তির উপর রোজা ফরজ। তবে শরিয়ত তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছেন। এমন ব্যক্তির একটি রোজার পরিবর্তে একটি সদকায়ে ফিতর পরিমাণ গম, চাল অথবা তার মূল্য একজন মিসকিনকে দিয়ে দিতে হবে। অথবা একজন মিসকিনকে দু’বেলা পেট ভরে আহার করাতে হবে। সেহরির ব্যবস্থা সুন্নত, কয়েকটি খেজুর অথবা এক চুমুক পানির দ্বারা হলেও। সেহরি শেষ সময় খাওয়া ও ইফতার তাড়াতাড়ি করা মুস্তাহাব।
আল্লাহপাক আমাদিগকে পবিত্র রমজানুল মোবারকের রোজাগুলি সঠিকভাবে রাখার তৌফিক দান করুন। আমিন। ছুম্মা আমিন।
[মাওলানা কাজী মো. শাহেদ আলী এমএম, সাবেক সুপার (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত), ইয়াকুবিয়া দাখিল মাদ্রাসা, মীরেরচর, সদর সুনামগঞ্জ]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com