ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ এলাকায় কুড়িয়ে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা প্রকৃত মালিকের কাছে ফেরত দিয়ে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উপজেলার সদর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা বিত্তহীন সমবায় সমিতি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শাহেদ মিয়াকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ওই ব্যক্তিকে উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রজেশ চন্দ্র দাস, পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, মধ্যনগর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. হাফিজ উদ্দিন, সাংবাদিক সালেহ আহমদ, ইউএনওর কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আবুল হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদের পূর্বপাশের গেইটের এক কোণে ৫০০টাকা মূল্যের ১০০টি নোটের ৫০হাজার টাকার একটি বান্ডিল কুড়িয়ে পান উপজেলার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা বিত্তহীন সমবায় সমিতি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. শাহেদ মিয়া (৬০)। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই টাকা পাওয়ার বিষয়টি উপজেলা পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামকে জানান। ওই কর্মকর্তা ঘটনাটি ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমানকে মুঠোফোনে জানান। ইউএনও’র নির্দেশে এ নিয়ে ওইদিন ধর্মপাশা সদর বাজারে মাইকিং করা হয়। মাইকিংয়ের মাধ্যমে টাকা প্রাপ্তির খবর পেয়ে ইউএনও’র কার্যালয়ে ছুটে আসেন উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের উত্তর সলপ গ্রামের বাসিন্দা ও ধান চালের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নেহার মিয়া (৪৮)। ওইদিন বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে ওই ব্যবসায়ী ইউএনও’র কাছ থেকে ওই টাকা গ্রহণ করেন।
কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় মো. শাহেদ মিয়াকে ইউএনওর পক্ষ থেকে গতকাল সততার সম্মাননা স্বরূপ উপহার দেন ইউএনও।
মো. শাহেদ মিয়া বলেন, পুরস্কার বা মানুষের কাছ থেকে বাহবা পাবার আশায় আমি ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিইনি। অন্যের ধনে আমার কোনো লোভ নেই। টাকাটা ফেরত না দিলে সারজীবন এটি আমার জন্য অভিশাপ হয়ে থাকতো। যতদিন বাঁচবো সততা বজায় রেখেই বাঁচব। কোটি কোটি টাকার কাছেও নিজের সততাকে কখনো বিকিয়ে দেব না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, কুড়িয়ে পাওয়া টাকা ফেরত দিয়ে ওই ব্যক্তি সমাজে সততার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। একজন সৎ মানুষকে একটা কিছু উপহার হিসেবে দিতে পেরে নিজেও খুব আনন্দিত।