1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

নাব্যতা সংকট : খাসিয়ামারা নদীর মরণ দশা

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ মে, ২০১৯


মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::

দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ও সুরমা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবহমান পাহাড়ি খাসিয়ামারা নদী নাব্যতা হারিয়ে ফেলেছে। এতে কপাল পুড়ছে লক্ষাধিক কৃষকসহ এলাকাবাসীর।
শুকনো মৌসুমে কৃষকদের ফসলি জমি চাষাবাদের সুবিধার্থে পানি সংরক্ষণ করে রাখতে নদীটির সুরমা ইউনিয়নের পশ্চিম টিলাগাঁও অংশে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাবার ড্যাম সেচ প্রকল্প নির্মিত হয়। কিন্তু রাবার ড্যামের উজানে পাহাড়ি বালু জমে বিশাল বিশাল চর সৃষ্টি হওয়ায় ভেস্তে যাচ্ছে কৃষকদের সুবিধার্থে তৈরি স্বপ্নের এই প্রকল্প। নদীতে চর পড়ায় শুষ্ক মৌসুমেও পানি ধারণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে গত কয়েক বছর ধরে পানির অভাবে অনাবাদি থেকে যাচ্ছে হেক্টরের পর হেক্টর ফসলি জমি। এতে একদিকে খাদ্যশস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে অপরদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষীরা। তাছাড়া নদীটির নাব্যতা না থাকায় বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে আসা পানিতে অসময়ে নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খাসিয়ামারা নদীর উভয় তীরে বিশাল বিশাল বালু চরের সৃষ্টি হয়েছে। নাব্যতা হারিয়ে ইতোমধ্যে নদীর স্বাভাবিক গতিপথ অনেকটাই পাল্টে গেছে। এছাড়া দিন দিন নদী ভাঙনও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। নদী ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে পশ্চিম বাংলাবাজার, টিলাগাঁও, মহব্বতপুর, আলীপুর বাজারসহ আশপাশের প্রায় ১০-১৫টি গ্রামের বসতভিটা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। নদী ভরাটের কারণে রাবার ড্যাম সেচ প্রকল্প কাজে না আসায় গত কয়েক বছর যাবৎ সীমান্তের সন্নিকটে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখছেন স্থানীয়রা। ফলে রাবার ড্যাম সেচ প্রকল্পে পর্যাপ্ত পানি ধারণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এদিকে পানি না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে ফসল ফলাতে না পারায় বিস্তীর্ণ ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে আছে। কৃষকদের দাবি- চাষাবাদ ও কৃষিজমি টিকিয়ে রাখতে খাসিয়ামারা নদী খনন জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাধারণ স¤পাদক তাজুল ইসলাম ও টিলাগাঁওয়ের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, নদী চর পড়ে ভরাট হওয়ায় রাবার ড্যাম সেচ প্রকল্পের মাধ্যমেও পানি ধারণ করে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। পানি না থাকায় এবারও বেশিরভাগ জমি অনাবাদি থেকে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে বৃহত্তর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের কৃষি ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। তাই অবিলম্বে সরকারকে খাসিয়ামারা নদী খননের উদ্যোগ নিতে হবে।
জাতীয় কৃষক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আবাদি কৃষক নেতা আব্দুল আওয়াল বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। খাসিয়ামারা নদী খনন না হওয়ায় পানির অভাবে উপজেলার লক্ষাধিক কৃষক অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন। আমরা একাধিক বার কৃষকদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করে কৃষির সুবিধার্থে খাসিয়ামারা নদী খননের দাবি জানিয়েছি। কৃষকদের এই প্রাণের দাবি মেনে নিয়ে সরকারিভাবে দ্রুত নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হোক।
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার বলেন, নদী ভরাট হওয়ায় শুধু কৃষকরাই নয়, আশপাশের এলাকার সবাই ক্ষয়ক্ষতির শিকার। নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। সবার বৃহত্তর স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে খাসিয়ামারা নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশীদ বলেন, কৃষকদের দাবির সাথে আমিও একাত্মতা পোষণ করছি। বালুর চর পড়ে খাসিয়ামারা নদী নাব্যতা হারাতে বসেছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, গ্রাম, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। শুকনো মৌসুমে পানি না থাকায় কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেনা। রাবার ড্যামের উজান থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে নদী খনন করা গেলে নদী আবার আগের মতো প্রাণ ফিরে পাবে। কৃষকরাও উপকৃত হবে। তাই দ্রুত খাসিয়ামারা নদী খননের দাবি জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com