1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে সুনামগঞ্জের দুই যুবক নিহত : পরিবারে শোকের মাতম

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ মে, ২০১৯


মোসাইদ রাহাত ::

ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে বাড়ি ছেড়েছিল দুই স্বপ্নবাজ যুবক। কিন্তু সাগরজলে ডুবে মারা গেছে দুই হতভাগ্য যুবকের স্বপ্ন। দুই যুবকের পরিবারে এখন শোকের মাতম। স্বজনরা দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই দুই যুবক হলেন ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর গ্রামের মো. আজির উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন (২২) ও দিরাই উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চণ্ডিপুর গ্রামের আব্দুস সবুরের ছেলে মাহবুবুল করিম (২৬)। সোমবার মধ্যরাতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
নিহত নিজামের স্বজনরা জানান, নাজিম উদ্দিন সিলেটের মদন মোহন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। চার ভাই, তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। সিলেট নগরের লেকসিটি আবাসিক এলাকায় নিজেদের বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। গত বছর ছাতকের উজিরপুর গ্রামের বাসিন্দা শামীম আহমদ নাজিমকে ইতালি পাঠানোর কথা বলেন। এরপর থেকে নাজিম পরিবারের কাছে বায়না ধরেন ইতালি যাবেন। তাঁর মা-বাবা প্রথমে রাজি না হলেও পরে ছেলের আবদারে রাজি হন। শামীমের সঙ্গে আট লাখ টাকায় চুক্তি হয়। কথা ছিল প্রথমে অর্ধেক এবং ‘গেমে’ ওঠার পর বাকি টাকা দেওয়া হবে। এরপর গত বছরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে গ্রামের আরও দুই তরুণ শরিফ, শহীদসহ নাজিম বাড়ি থেকে ঢাকায় যান। পরে ঢাকা থেকে লিবিয়া। নাজিমের সঙ্গে লিবিয়া যাওয়া শরিফ গত শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই বাড়িতে ফিরে আসেন।
নাজিমের চাচা শাহীন আহমদ জানান, দালাল শামীম আহমেদের মাধ্যমে ৮ লক্ষ টাকায় নাজিমের ইতালি যাওয়ার জন্য চুক্তি হয়। নাজিমসহ অন্যদের প্রথমে লিবিয়া গিয়ে কয়েক মাস জেল খাটতে হয়েছে। জেল থেকে বের হয়ে গত বৃহ¯পতিবার (৯ মে) লিবিয়ার জুয়ারা শহর থেকে নৌকাযোগে ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় নাজিমসহ অন্যরা। এর মধ্যে গভীর সাগরে যখন তাদের বড় নৌকা থেকে ছোট নৌকায় তোলা হয়, তার কিছুক্ষণ পরই সাগরের উত্তাল ঢেউয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।
তিনি আরো জানান, দালালের সাথে চুক্তি ৮ লাখ টাকার হলেও আমাদের কাছ থেকে নাজিম ইতালি যাওয়ার আগেই ১০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। কয়েকদিনের মধ্যে তাকে ইতালি পৌঁছানোর কথা ছিল। পরে রেডক্রিসেন্টের মাধ্যমে জানলাম আমার ভাতিজা নৌকাডুবিতে মারা গেছে।
অন্যদিকে মাহবুবুল করিমও ঠিক নাজিমের মতোই উন্নত জীবনের আশায় ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন ২০১৮ সালের মে মাসে। পরিবারের ৭ ভাই, ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। মাহবুবুল করিম বিশ্বনাথ উপজেলার বৈরাগী বাজারের দালাল পারভেজ মিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া এবং লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার চুক্তিবদ্ধ হয়।
মাহবুবুল করিমের বড় ভাই রেজাউল করিম বলেন, মাহবুব ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতেন। ২০১৮ সালের প্রথম দিকে তিনি দেশে এসে আর ভারতে যাননি। পরে দালাল পারভেজের মাধ্যমের ইতালি যাওয়ার জন্য রওনা হন। লিবিয়া যাওয়ার পর মাঝেমধ্যে পরিবারের সঙ্গে কথা হতো। কিন্তু ছয় মাস ধরে যোগাযোগ ছিল কম।
রেজাউল করিম আরো বলেন, আমি প্রায় ৮ লাখ টাকার মতো দালালকে দিয়েছিলাম। দালাল পারভেজ আমাকে জানিয়েছে সে নাকি ইতালি গিয়ে পৌঁছেছে। কিন্তু এখন শুনি আমার ভাই মারা গেছে।
তাছাড়া রোববার মধ্যরাত থেকে ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবিতে সুনামগঞ্জের ৩ জন নিহত হওয়ার খবর প্রচার হলেও খোঁজ জানা যায় নিহত হয়েছেন দুই জন। যখন রেডক্রিসেন্ট তালিকা তৈরি করে সে সময় একজনের নাম দুইবার চলে আসে।
সুনামগঞ্জ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট লেভেল অফিসার কনিকা তালুকদার বলেন, প্রথমে আমাদের ৩ জনের নাম দেওয়া হলেও এখানে মাহবুব নামটি দুই বার চলে আসে। আমরা যখন তদন্ত করি ও খোঁজ নেই তখন শুধু একজন মাহবুবের তথ্য পাই। পরে আমাদের রেড ক্রিসেন্ট থেকে জানানো হয় যে মাহবুব একজনই ওর নাম দুইবার চলে এসেছিল।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com