মানুষের জীবনধারণের পাঁচটি মৌলিক উপকরণের অন্যতম হলো খাদ্য। বিশ্বে যেসব রাষ্ট্র উন্নত ও কল্যাণমূলক হিসেবে খ্যাত, সেসব রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা হয়। বাংলাদেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংস¤পূর্ণতা অর্জন করেছে। বিশেষ করে কৃষি ক্ষেত্রে সফলতার প্রেক্ষিতে ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংস¤পূর্ণ হয়েছে। তাই দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক খাদ্য চাহিদা ভাতের সংস্থান হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ উচ্চমাত্রার অপুষ্টি ও খাদ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ সাধারণ জনগণকে নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে পারছে না। আর নিরাপদ খাদ্যের অভাবে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। সম্প্রতি উচ্চ আদালত খাদ্যে ভেজাল বন্ধে মাদকের মতো ‘যুদ্ধ ঘোষণা’র তাগিদ দিয়েছেন।
নিরাপদ খাদ্য পাওয়া নিয়ে মানুষ এখন খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ এটি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সে কারণে সাধারণ মানুষ, উৎপাদনকারী, বাজারজাতকারীর মধ্যে উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও বিপণন নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কৃষিতে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশকের ব্যবহার, খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিনসহ বিষাক্ত রাসায়নিকের মিশ্রণসহ বিভিন্ন কারণে নিরাপদ খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধান খাদ্য চাল, শাক-সবজি ও ফলমূলসহ পানিও দূষিত হচ্ছে। আর দূষিত খাদ্যের ফলে মানুষ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
খাদ্য উৎপাদন বাড়লো এবং খাদ্যে স্বয়ংস¤পূর্ণতা অর্জন হলো তারপরও বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তার এ ঝুঁকিতে কেন? চাল ডাল শাক-সবজি থেকে শুরু করে পানি এমনকি দুধও আজ নিরাপদ নয়। এই অবস্থা কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না। খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে আপস করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরণে প্রতিটি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত অংশগ্রহণ দরকার। বাংলাদেশ সরকার, ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যাশা- মাদকের বিরুদ্ধে যেমন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তেমনি খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।