দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার গ্রামে গ্রামে গরু চুরিসহ একটি চিহ্নিত চোরাই সিন্ডিকেটের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মানুষ। লাখ লাখ টাকার গবাদি পশু চুরি হওয়ার ভয়ে প্রতিটি গ্রামের কৃষকরা রাত জেগে গোয়ালঘর পাহারা দিচ্ছেন। দিনে হাওরে নিজেদের শেষ সম্বল সোনালী ফসল বোরো গোলায় তোলার আপ্রাণ চেষ্টা এবং রাতে চোর আতঙ্কে নির্ঘুম থাকেন কৃষকরা। চোরের উপদ্রব ঠেকাতে এবং এলাকার চিহ্নিত চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার উপজেলার সুরমা, লক্ষ্মীপুর ও দোহালিয়া তিন ইউনিয়নের কৃষকরা উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত গণপিটিশন দিয়েছেন।
গণপিটিশনে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা উল্লেখ করেন, লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের তফাজ্জল আলী (২৪), সুরমা ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের আনসার মিয়া (২৬) ও একই গ্রামের নানু মিয়া ওরফে নাইওর (৪৬)সহ একটি সংঘবদ্ধ চোরাই সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি চোরাই কয়েকটি গবাদি পশু উদ্ধার করা হলেও চোরদের হাতেনাতে ধরা যায়নি। এছাড়া চিহ্নিত চোরদের বিরুদ্ধে একাধিক স্থানীয় সালিশ বিচারের আয়োজন করা হলেও অভিযুক্তরা উপস্থিত হয়নি। প্রতিনিয়ত রাতের বেলা উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রতিকার মিলছেনা। গত ৬ মাসে তিন ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে ৩৬টি গরু, ৩টি ভেড়া, ৪টি নৌকা, ১টি জালসহ প্রায় ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার বিভিন্ন মালামাল চুরি হয়। চোরদের উপদ্রবে হাওরপাড়ের কৃষকদের জীবন এখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
সুরমা ইউপি সদস্য আলী নুর জানান, প্রতি রাতেই কোনো কোনো গ্রামে চুরির ঘটনা ঘটছে। চুরির ভয়ে বর্তমানে ভর বোরো মৌসুমে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। চোরদের বিরুদ্ধে স্থানীয় সালিশ বিচারসহ ব্যবস্থা গ্রহণ করেও কোনো লাভ হচ্ছেনা।
নুরপুর গ্রামের আব্দুর রউফ জানান, চোরের উপদ্রবে রাতে ঘুমাতে পারছিনা। আমাদের লাখ লাখ টাকার গবাদি পশু নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি চোরাই সিন্ডিকেটের উপদ্রব বেড়ে গেছে। গবাদি পশু হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছেন প্রত্যন্ত এলাকার অনেকে। চুরি ঠেকাতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার ওসি সুশীল রঞ্জন দাস বলেছেন, তিনজনকে অভিযুক্ত করে গণপিটিশন দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।