সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
আত্মীয়-স্বজন, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও ভক্তদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বনানীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ। ৬৭ বছর বয়সী এ শিল্পী শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় বারিধারায় নিজের বাসায় শেষঃনিশ্বাস ত্যাগ করেন। রোববার জোহরের পর বারিধারার পার্ক রোড জামে মসজিদে জানাজা শেষে বেলা আড়াইটায় বনানীর সম্মিলিত সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাকে।
জনপ্রিয় এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৫২ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন বাংলা সংগীতের এই কিংবদন্তি শিল্পী। মাত্র ১১ বছর বয়সে রেডিও ও চলচ্চিত্রের গানে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৩ সালে। ‘নতুন সুর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেছিলেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচি টিভি-রেডিওসহ উর্দু ছবিতেও অনেক গান করেছেন এই শিল্পী। গান শিখেছেন গজল স¤্রাট মেহেদী হাসানের কাছে।
গানের জগতে পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ে রেডিও, টেলিভিশন আর চলচ্চিত্রের অসংখ্য গানের পাশাপাশি শাহনাজ রহমতুল্লাহ’র অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে চারটি। প্রথমটি ছিল প্রণব ঘোষের সুরে ‘বারটি বছর পরে’, তারপর প্রকাশিত হয় আলাউদ্দিন আলীর সুরে ‘শুধু কি আমার ভুল’।
সংগীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় শাহনাজ রহমতুল্লাহর গাওয়া চারটি গান স্থান পায়। এরমধ্যে আনোয়ার পারভেজের সুরে করা দুটি গান, খান আতাউর রহমান ও আবদুল লতিফের সুরে দুটি ভিন্ন গান রয়েছে।
‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘এক নদী রক্ত পেরিয়ে’, ‘আমার দেশের মাটির গন্ধে’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে আমায় বল’, ‘সাগরের তীর থেকে’, ‘খোলা জানালা’, ‘পারি না ভুলে যেতে’, ‘ফুলের কানে ভ্রমর এসে’, ‘আমি তো আমার গল্প বলেছি’ – এরকম অসংখ্য গান দিয়ে বাংলাদেশের অগণিত শ্রোতার মন জয় করেছেন শাহনাজ রহমতুল্লাহ।
উল্লেখ্য, শাহনাজ রহমতুল্লাহর বড় ভাই সুরকার আনোয়ার পারভেজ, আরেক ভাই নায়ক ও গায়ক জাফর ইকবাল।