স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় এক সপ্তাহে তিন হত্যাকা-ের ঘটনায় নাগরিক সমাজ ও সুধীজন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে ঘাতকদের বিচারের আওতায় এনে তাদের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন। তারা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে কৃষক নেতা আজাদ মিয়া বাসায় যাওয়ার পথে পিটিআই’র সামনের সড়কে দুর্বৃত্তদের দ্বারা আক্রান্ত হন। মাথায় আঘাত করেই দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিলেটে রেফার করেন। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৭ মার্চ রাতে মারা যান তিনি। স্থানীয় বিরোধ, শালিস ও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় তাকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করেন স্বজনরা। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গত শুক্রবার জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত লোক আহত হন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত আব্দুর রউফকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সেখানে নেওয়ার পথে মারা যান আব্দুর রউফ। এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা খুনীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। তার বুক ও পিঠে ধারালো ছুরির একাধিক আঘাত ছিল। তাকে খুন করে ধলারপাড় প্রাথমিক স্কুলের পিছনে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। সকালে এলাকাবাসী লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতদের মধ্যে একজন হত্যাকা-ের ঘটনা স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে।
এদিকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিনটি খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুধীজন। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। অপরাধপ্রবণতা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা মালেক হুসেন পীর বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে শান্তি ও সম্প্রীতির জনপদে তিনটি খুনের ঘটনা উদ্বেগজনক। এই তিন খুনই বলে দেয় আমাদের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চিত্র কেমন। অবিলম্বে খুনী ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। তাহলে জনমন থেকে উদ্বেগ কমবে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, তিনটি ঘটনায় আমরা সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেছি। এসব খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারে একাধিক ইউনিট কাজ করছে। অপরাধীরা কেউ রেহাই পাবেনা।