1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ধর্ষণ প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

  • আপডেট সময় সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদশিরোনাম ছিল, ‘ধর্ষকের পরিচয় তোলে ধরুন’। গত শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রসঙ্গক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘শিশু ধর্ষণ, নারী ধর্ষণ, এটা অত্যন্ত গর্হিত একটা কাজ। যারা এসব করে তারা সমাজের শত্রু, তাদের প্রতি ঘৃণা।’ একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি ব্যক্তিরও পরে একজন রাজনীতিবিদ, রাজনীতিবিদের পরে একটি রাষ্ট্রের কর্তা। তাঁকে কথা বলতে হয় অনেক মাপজোক করে, সংসদীয় ভাষায় পরিমিতি রক্ষা করে।
মুক্তিযুদ্ধে জয় লাভ করে এই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এমন গৌরবের ক’টি দেশ আছে পৃথিবীতে যে, স্বাধীনতার জন্য ৩০ লক্ষ প্রাণ ও সেই সঙ্গে চার লক্ষাধিক নারীর ইজ্জত অকাতরে বিসর্জন করেছে? বাঙালি সেই জাতি, সেই দেশ। আর স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধর্ষকদের প্রতি ঘৃণা বর্ষণ করতে হচ্ছে কোনও এক অনুষ্ঠানের ভাষণে। যা এই সত্যকে প্রতিপন্ন করে যে, বর্তমান বাংলাদেশে নারীদের জন্য সামাজিক পরিবেশটা কিংবা পরিপ্রেক্ষিতটা অনুকূল নয়।
ধর্ষক একটি সমাজকে অসুস্থ করে তোলছে প্রতিনিয়ত। একাত্তরে দেশের সবাই স্বাধীনতা চেয়েছিল, কতিপয় চায়নি। তার বিনিময়ে ত্রিশ লক্ষ প্রাণ দিতে হলো। কেউ যদি ভাবেন যে, এখনও তারা চায় না, তাই তারা ধর্ষক হয়ে উঠেছে। তারা চায় এখানে একাত্তরের মতো একটা যুদ্ধাবস্থা বজায় থাকুক। বোধ করি তার উপর খুব একটা দোষারোপ করা যাবে না। এখন সমাজের সকলেই সুস্থ থাকতে চায়। কতিপয় সমাজটাকে অসুস্থ করে তোলছে। একমাত্র ধর্ষক ভিন্ন সমাজের সকলে ধর্ষণকে ঘৃণা করে। এই কতিপয় ধর্ষকের জন্য সমাজটা অসুস্থ হয়ে গেছে। এই সুস্থতাকে ফিরিয়ে আনতে হলে এই ধর্ষকদের নির্মূল করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নির্মূলের কথা না বলে বলেছেন ঘৃণা করার জন্য। এই ঘৃণার অর্থ হোক স্বজনের ঘৃণা, পরিবারের ঘৃণা, বন্ধুর ঘৃণা, পরিচিতজনের ঘৃণা।
এখন দেশে হানাদার পাকিস্তানি নেই। প্রধানমন্ত্রী এখন তো অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, জাতীয় উন্নয়ন নিয়ে কথা বলবেন। অথচ পরিতাপের বিষয় যে, তাঁকে ধর্ষণ নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন তাঁর দেশের কোনও মানুষকে ঘৃণা করতে বলেন, সেটা অবশ্যই তাঁর জন্য কষ্টের এবং জাতির জন্য লজ্জার এবং তাঁর বক্তব্যে ধর্ষণ প্রতিরোধে আইনগত ব্যবস্থার ও মোবাইল কোর্ট কার্যকর করার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, যেখানে তিনি দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য জাতিকে প্রস্তুত হতে বলছেন। পৃথিবীতে এমন কোনও দেশ কি কখনও ছিলো বা আছে, যে-দেশে ধর্ষণ জাতীয় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছিল বা দিয়েছে? বোধ করি নেই। মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ তার উদাহরণ হতে চলেছে।
ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনের বিষয়ে বলার তেমন কীছু নেই। আইন আছে এবং আপাতত সেটাই যথেষ্ট। কিন্তু আইনের প্রয়োগকে যথাযথ করতে হবে। প্রকৃতপ্রস্তাবে আমাদের দেশে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ধর্ষণের বিষয়টি বরাবরই অবহেলিত থেকে যায়। আইন ধর্ষকের পক্ষে না দাঁড়ালেও আইন প্রয়োগকর্তা কোনও না কোনও কারণে দাঁড়িয়ে যান, পুরুষতান্ত্রিকতার কারণে ধর্ষক সামাজিক পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে এবং প্রকারান্তরে ধর্ষণের প্রতিবিধান দুঃসাধ্য হয়ে উঠে। এই ব্যাপারে যেমন সতর্ক হতে হবে তেমনি কঠোর হতে হবে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে। তা নাহলে ধর্ষকের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ঘৃণা একটি কথার কথা হয়ে থেকে যাবে, কার্যত কোনও ফলোদয় হবে না। মনে রাখতে হবে, ধর্ষণ সন্ত্রাসেরই নামান্তর। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্যসহনশীলতা দেখানোর আহ্বান জানিয়েছন প্রধানমন্ত্রী। ধর্ষণকেও শূন্যসহনশীলতা দেখান।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com