1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বিশুদ্ধ পানির সংকট

  • আপডেট সময় বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯


শহীদনুর আহমেদ ::

সুনামগঞ্জ শহরে বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছেনা। কিছু কিছু নলকূপে স্বল্প পরিমাণে পানি উঠলেও তা সংগ্রহে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। তাছাড়া একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পানি শোধন করে গ্রাহকদের পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে পারছেন না পৌর কর্তৃপক্ষ।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার পানি শাখার তথ্য অনুযায়ী, শহরে পৌরসভার মালিকানাধীন নলকূপ রয়েছে ৭ শতাধিক। এর মধ্যে ১০০ নলকূপে স্বল্প পরিমাণ পানি উঠলেও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াসহ বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ৬ শতাধিক নলকূপে পানি উঠছে না। তাছাড়া রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার না হওয়ার কারণে আরো শতাধিক নলকূপ পরিত্যক্ত রয়েছে। এছাড়াও পৌর এলাকায় ব্যক্তিমালিকানাধীন ৫ শতাধিক নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে শ’খানেক নলকূপে পানি উঠছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, পানি সেবা প্রাপ্তির তালিকায় সুনামগঞ্জ পৌরসভায় প্রায় ৫ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। শহরের কাজির পয়েন্টে অবস্থিত একটি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে ১৬৫০ পরিবারকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এদিকে সুরমা নদীর পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে পানি কম উঠছে। পূর্বে ঘণ্টায় ৬০ হাজার গ্যালন পানি তোলা গেলেও বর্তমানে ৪৫ হাজার গ্যালনও উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে না। দিনে টানা ১৪ ঘণ্টা মোটর চালিয়েও গ্রাহকদের কাক্সিক্ষত সেবা দেয়া যাচ্ছে না।
তবে পৌরসভার পানি শাখার তত্ত্বাবধায়ক বজলুল হক জানিয়েছেন, বিশুদ্ধ পানি সংকট সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষ দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের ময়নার পয়েন্ট ও সুনামগঞ্জ জেলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় দু’টি পানি শোধনাগারের কাজ বাস্তবায়ন করছে। যার মাধ্যমে ৩ হাজারেরও অধিক গ্রাহকের পানি চাহিদা মেটানো যাবে। এছাড়াও পৌর এলাকায় ৫শত গভীর নলকূপ স্থাপনের চাহিদা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছেন মেয়র নাদের বখত।
এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ভোগছেন শহরের বড়পাড়া, আমপাড়া, মড়ল হাটি, পশ্চিম হাজিপাড়া, উকিলপাড়া, নতুনপাড়া, ষোলঘর, নবীনগর, বনানীপাড়াসহ ঘনবসিত এলাকার বাসিন্দারা। বেশি বিপাকে আছেন তুলনামূলক দরিদ্র পরিবারের লোকেরা। পানি সরবরাহে সরকারি নলকূপ অন্যতম মাধ্যম হলেও পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ নলকূপে পানি না উঠায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
মঙ্গলবার শহরের বড়পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিজের গভীর নলকূপ থেকে মোটরের সাহায্যে পানি তুলে প্রতিবেশীদের পানি বিলি করছেন দিলদার হোসেন। এ সময় তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, বড়পাড়া বস্তি এলাকায় পৌরসভার মালিকানাধীন একটি নলকূপ রয়েছে। কিন্তু এই নলকূপে পানি না উঠায় বিপাকে আশেপাশের পরিবারগুলো। তাই প্রতিদিন বিকেলে নিজের গভীর নলকূপ থেকে পানি তুলে প্রতিবেশীদের বিলি করি। বড়পাড়া এলাকায় অধিকাংশ নলকূপে পানি উঠছে না বলে জানান তিনি।
শহরের উকিল পাড়া এলাকার বাসিন্দা নূরুল হাসান আতাহের বলেন, উকিলপাড়া এলাকার অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠে না। উঠলেও দীর্ঘক্ষণ চাপ দিয়ে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, এলাকার মানুষ বিশুদ্ধ পানি সমস্যা নিয়ে বড় বিপাকে আছে।
এ ব্যাপারে পৌরসভার প্যানেল মেয়র হোসেন আহমদ রাসেল বলেন, পৌর এলাকার বাসিন্দাদের পানি সেবা নিশ্চিত করতে পৌর কর্তৃপক্ষ খুবই আন্তরিক। প্রতি বছর বাজেটে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা ভর্তুকী দিয়ে নাগরিকদের পানি সেবা নিশ্চিত করার প্রয়াস চালানো হয়। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পৌরসভার প্রায় ৮০ ভাগ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এতে পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সংকট দেখা দেয়। তিনি বলেন, একটি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে গ্রাহকদের মধ্যে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। যা চাহিদা অনুপাতে যথেষ্ট নয়। দেড়কোটি টাকা ব্যয়ে আরো দু’টি পানি শোধনাগার নির্মাণাধীন রয়েছে। যার মাধ্যমে সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহককে সেবা দেয়া যাবে। তাছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সংকট নিরসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com