স্টাফ রিপোর্টার ::
দিরাই উপজেলার বরাম হাওরের গুরুত্বপূর্ণ দুই প্রকল্পে কাজ এখনো অর্ধেকের বেশি বাকি আছে। কাজের ধীরগতি নিয়ে শঙ্কিত স্থানীয় কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কৃষকদের অভিযোগ প্রকল্প কমিটির লোকজন স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্বজন হওয়ায় কাজ আদায়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনকে। প্রশাসনের মতে প্রকল্পগুলোর প্রভাবশালী সভাপতি-সম্পাদককে খুঁজে পাচ্ছেনা প্রশাসনের লোকজন। বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সংশ্লিষ্টদের খুঁজে পাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
সোমবার সরেজমিন ভরাম হাওরের ২৮নং প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৬৯৯ মিটার দৈর্ঘ্যরে বাঁধের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি জায়গা ফাঁকা রয়ে গেছে। কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে মাটি ফেলা হলেও বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে এখনও মাটি পড়েনি। মাটির কাজ কবে শেষ হবে জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। প্রাক্কলন অনুযায়ী যথাসময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এই বাঁধের কাজে ধীরগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, আমাকে বিপদে ফেলেছে মাটি কাটার ঠিকাদাররা। তারা আমার সাইটে যে এস্কেভেটর মেশিন দিয়েছিল তা নষ্ট হয়ে যায়। দশদিন লেগেছে মেশিন ঠিক করতে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী রিপন আলী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে বিপদে আছি, তিনদিন ধরে প্রকল্প কমিটির সভাপতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তার মোবাইল বন্ধ। বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েও তাকে পাওয়া যাচ্ছেনা। প্রকল্প কমিটির সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্বজন। তারা কাজ না করিয়ে এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি করছে। উল্টো আমাকে দেখে নেয়ারও হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, এস্কেভেটর মেশিনের ঠিকাদারের সাথে কথা বলেছি, আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) থেকে দুটি মেশিন দিয়ে কাজ করাবো।
এদিকে একই হাওরের ১৭নং প্রকল্পে সভাপতি-সম্পাদক কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রকল্পে কাজ করাচ্ছেন আবদুল হামিদ চৌধুরী। তিনিও গাফিলতি করছেন বলে অভিযোগ করেন। আবদুল হামিদ চৌধুরী বলেন, প্রকল্প কমিটির সভাপতি আমার ভাতিজা। এস্কেভেটর মেশিন না পাওয়ার কারণে বাঁধের কাজে বিলম্ব হয়েছে। আগামী দুইদিনের মধ্যে কাজ শেষ করবো।
পাউবো জানিয়েছে বরাম হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ কটাইখালীতে ১৭ ও ২৮ দুটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১৬শ মিটার বাঁধের অনুকূলে ৩৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭০৯ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫০ ভাগ টাকা প্রকল্প কমিটির অনুকূলে প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু প্রাক্কলন মতো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
দিরাই উপজেলার অন্যান্য প্রকল্পেও কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকসহ হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।