সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
নাম তার ‘চিন্তাহরণ’ ওরফে ‘শান্ত বিশ্বাস’। নামের সঙ্গে কর্মের বেশ মিল রয়েছে তার। চিন্তার মনোনিবেশ ঘটিয়ে ঠা-া মাথায় প্রতারণা ও নারীদের সম্ভ্রম হরণই ছিল তার নেশা।
কখনও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার, কখনো মেজর, এএসপি পরিচয়ে কর্মকর্তা সেজে মানুষকে ধোঁকা দিয়ে আসছিলেন তিনি। এছাড়া চাকরি দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অকশনে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে নিজ ভাড়া বাসার মালিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৭০ হাজার টাকা। সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া সেই প্রতারক চিন্তাকরণ বিশ্বাস ধরা পড়েছেন সিআইডির হাতে।
রোববার সকালে সিলেট নগরের উপকণ্ঠ মেজরটিলা মোহাম্মদপুর আবাসিক এলাকার প্রত্যাশা-৪ বাসা থেকে তাকে আটক করে সিআইডি সিলেটের একটি টিম। আটক চিন্তাহরণ দে ওরফে শান্ত (৩২) টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার মহেন্দ্র বিশ্বাস ও ফুলমালা রানী বিশ্বাসের ছেলে।
সিলেট জোন সিআইডি’র কর্মকর্তা রিপন কুমার দে গণমাধ্যমকে বলেন, সিআইডি’র ভুয়া বিশেষ পুলিশ সুপার (এসপি) পরিচয় দেওয়া ওই কর্মকর্তা প্রতারণা করে কিছুদিন পরপর বাসা পরিবর্তন করতেন। বছরখানেক আগে নগরের শাপলাবাগ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থেকেছেন। ওখানে মানুষ ঠকানোর পর বাসা পরিবর্তন করে যান মেজরটিলায়। রোববার মেজরটিলা মোহাম্মদপুর আবাসিক এলাকার প্রত্যাশা-৪ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে আইডি কার্ড, ৯ সুন্দরী তরুণীর ও দুই যুবকের বায়োডাটা এবং নগদ ৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
জব্দ তালিকায় সাক্ষি হওয়া বাসার মালিক আব্দুস শহীদ জানান, ভুয়া এসপি পরিচয়ের ওই ব্যক্তি থানা থেকে অকশনে সিএনজি অটোরিকশা ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে নগদ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। অফিসার ভেবেই সরল বিশ্বাসে টাকাগুলো তার হাতে তুলে দিয়েছিলাম।
সিআইডি’র কর্মকর্তা রিপন কুমার দে আরও বলেন, যাদের কাছ থেকে বায়োডাটা নেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে ২ হাজার টাকা করে নিয়েছেন শান্ত। তাদের কাউকে সিভিল সার্জনে, পুলিশে বা মিনিস্ট্রিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সিআইডি’র এসপি শান্ত নাম ইমো ব্যবহার করতেন তিনি।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন বলেন, নাম তার চিন্তাকরণ হলেও ভুয়া পরিচয় দিয়ে মানুষ ঠকানো ও সুন্দরী মেয়েদের ইজ্জত হরণ ছিল তার নেশা। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করেছেন সিআইডি কর্মকর্তা রিপন কুমার দে। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।