জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
কেয়ার বাংলাদেশের কারিগরি সহযোগিতায়, জৈন্তিয়া ছিন্নমূল সংস্থা (জেছিস), টিপিং পয়েন্ট প্রকল্প জামালগঞ্জ উপজেলায় বাস্তবায়ন করছে। সমাজের মূল স্রোতধারার সকল কার্যক্রমে কিশোরীদের অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে শিশু বিবাহের প্রবণতা কমিয়ে আনা সম্ভব- এই বিশ্বাসকে সামনে রেখেই কাজ করছে টিপিং পয়েন্ট প্রকল্প। এই প্রকল্পের ব্যানারে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হেলিপ্যাড মাঠে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পরিচালিত হলো ব্যতিক্রম একটি আয়োজন ‘কিশোর-কিশোরীদের যৌথ অংশগ্রহণের মাধ্যমে ক্রিকেট খেলা’। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনে নেতৃত্ব দিয়েছে টিপিং পয়েন্ট প্রকল্পের নয়াহালট ফান সেন্টারের কিশোরী দল। ‘কিশোর-কিশোরীদের যৌথ ক্রিকেট খেলা’ সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। এই খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীগণ তাদের একটা স্বপ্ন বা ইচ্ছে পূরণ করতে পেরেছে। প্রতিটি খেলোয়াড় তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে তাদের অভিভাবক, গ্রামবাসী, ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন এবং টিপিং পয়েন্ট প্রকল্পের প্রতি যারা তাদের এই ইচ্ছে পূরণে বিভিন্নভাবে সহায়তা ও উৎসাহ প্রদান করেছেন। তারা বিশ্বাস করে – সকল পর্যায়ের সমর্থনের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরী বয়স থেকেই পাশাপাশি পথ চলা, একে অপরের সহায়ক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠার সুযোগ দিলে সমাজে অনৈতিক কাজগুলো কম ঘটবে।
কিশোরীরা শিশু বিয়ের শিকার কম হবে। যোগ্যতা অনুয়ায়ী নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা অর্জন করার সময় ও সুযোগ পাবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে; তৈরি হবে বৈষম্যহীন একটি সুষ্ঠু সমাজ। তাদের বিশ্বাসের বার্তাগুলো অধিক জনগণের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যেই কিশোর-কিশোরী যৌথ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন।
৭ জন কিশোর ও ৪ জন কিশোরী নিয়ে ১১ জনের দল দুই দলে নেতৃত্ব দিয়েছে মেহেদী এবং চমন। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও খেলা বন্ধ রাখেনি তারা। ৮ ওভারের খেলায়, টসে জিতে প্রথমে বলিং বা ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় স্যাটেলাইট-১১ দলের নেতা মেহেদী। চমনের নেতৃত্বে প্রথমেই ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ৮ ওভার শেষে ৭৭ রান করে ইস্কাটেক্কা দল। ৭৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নামে স্যাটেলাইট-১১। প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফলাফল নিশ্চিতের জন্য দর্শককে অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ বলটি পর্যন্ত। ৫ উইকেটে জয়ী হয় স্যাটেলাইট-১১ দল। ওপেনার হিসেবে মাঠে নেমে ৩২ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ী করার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে বিজয়ী দলের দলনেতা মেহেদী আর তাই খেলা শেষে বিচারকগণ ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার তুলে দিয়েছেন তারই হাতে। খেলায় অংশগ্রহণকারী কিশোরীগণ যদিও উল্লেখযোগ্য রান সংগ্রহ কিংবা উইকেট অর্জন করতে পারেনি তারপরেও খেলায় সাম্মু, নাঈমা, সন্তনা, ফারুমা, যমুনা, রাকিবা ও সবুতারার সক্রিয়তা ছিলো চোখে পড়ার মতো।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খেলার উদ্বোধন করেন জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. আবুল হাসেম। খেলা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন কেয়ার বাংলাদেশের টিপিং পয়েন্ট প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রফিকুল ইসলাম। খেলা পরিচালনায় ছিলেন মো. মনির হোসেন এবং মো. মেহেদী হাসান।