ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সোনামড়ল হাওরের জারারকোণা থেকে রাজনার ভিটা ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ নিয়ে চরম গাফিলতির করার অভিযোগে ওই প্রকল্পের পিআইসি সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারকে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান এই আদালত পরিচালনা করেন।
এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী বাঁধের স্লোপ ও কমপেকশন না করায় সোনামড়ল হাওরের চারটি ও ধানকুনিয়া হাওরের দুইটি পিআইসি’র সভাপতি ও সদস্য সচিবকে শোকজ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এসব নোটিশ সংশ্লিষ্ট পিআইসি কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোনামড়ল, ধানকুনিয়া ও চন্দ্র সোনার থাল হাওরের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত থানা পুলিশ ও পাউবো’র এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শন করেন ধর্মপাশার ইউএনও মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান। পরিদর্শনকালে তাঁরা সোনামড়ল হাওরের জারারকোণা থেকে রাজনার ভিটা পর্যন্ত ফসলরক্ষা বাঁধটির কাজে কাছ থেকে মাটি উত্তোলন, বালি মাটির ব্যবহার, ঘাস পরিষ্কার না করে বাঁধে মাটি ফেলা, কমপেকশন ও স্লোপ সঠিকভাবে না করার বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে। এ অবস্থায় পিআইসি কমিটির সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারকে ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আটক করা হয়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে ইউএনওর কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ২০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই রাতে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে ও নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ করবেন বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন সর্বানন্দ তালুকদার। পরে তিনি সেখান থেকে মুক্তি পান। এ ছাড়া সোনামড়ল হাওরের চারটি প্রকল্প কাজ ও ধানকুনিয়া হাওরের দুটি প্রকল্প কাজে সঠিকভাবে স্লোপ ও কমপেকশন না হওয়ায় এসব পিআইসি সভাপতি ও সদস্য সচিবদের কাছে গতকাল শুক্রবার সকালে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পাউবো’র উপসহকারী প্রকশৌলী ও ধর্মপাশার হাওরের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ নিয়ে সীমাহীন গাফিলতি করায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পিআইসি কমিটির সভাপতি সর্বানন্দ তালুকদারকে ২০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরে তিনি জরিমানার টাকা পরিশোধ ও নির্ধারিত সময়ের আগেই তার প্রকল্প কাজ শেষ করবেন বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন। এছাড়া স্লোপ ও কমপেকশন সঠিকভাবে না হওয়ায় সোনামড়ল ও ধানকুনিয়া হাওরের ছয়টি পিআইসি কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশ প্রাপ্তির তিনদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ধর্মপাশার হাওরের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ নিয়ে যারা নয়ছয় করার চেষ্টা করবে তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।