1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ হোক

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের আদেশ চেয়ে করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাৎপর্যপূর্ণ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আদালত বলেছেন যে, চিকিৎসা একটি সেবাধর্মী পেশা, তাই চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য (অর্থোপার্জন) যেনো মুখ্য না হয়ে ওঠে, সেজন্য দেশে একটি নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারক আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে। সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে চিকিৎসা খাতে। কিন্তু সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয়ে আসলে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না, ওষুধ পাচ্ছেন না প্যারাসিটামল ছাড়া। হাসপাতালের ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়।’
একদা অদূর অতীতে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে এমন আর্থব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল যে, সেগুলোতে মানুষের একটি মৌলিক চাহিদা হিসেবে চিকিৎসাকে নিখরচায় প্রাপ্য একটি পণ্য করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলোকে নিখরচায় প্রাপ্য করে দেওয়ার মতো অর্থনীতি মানুষ ইচ্ছে করলেই চালু করতে পারে, সেটা কোনও অসম্ভব ব্যাপার নয়, প্রমাণিত প্রপঞ্চ বা সমাজবাস্তবতা। আমাদের দেশেও সে ব্যবস্থা কায়েম করা সম্ভব। কিন্তু এখানে সমাজব্যবস্থাটাকেই এমন করে রাখা হয়েছে যে, নিখরচায় কীছু পাওয়ার সমাজবিনির্মাণের চেষ্টা করলেই সব কীছুকে বেচে খাওয়ার দল সংঘবদ্ধ হয়ে তাদেরকে (নিখরচায় যারা কীছু পেতে চায়) নির্মমভাবে দমন করে, তাদের সঙ্গে থাকে প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা অপশক্তি। তবে কম খরচে চিকিৎসা পাওয়ার চেষ্টা আমাদের দেশে চলছে। অনেক ক্ষেত্রে এই প্রচেষ্টার সঙ্গে রাষ্ট্রশক্তিও সহানুভূতিশীল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিনা পয়সায় চিকিৎসা পাওয়ার আর্থসামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পৃথিবীর মানুষকে আরও অনেক অনেক দিন লড়তে হবে চিকিৎসা নিয়ে যারা ব্যবসা করেন তাদের সঙ্গে। বর্তমান আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় চিকিৎসা একটি উত্তম বাণিজ্যিক ব্যবস্থা। এরকম একটি বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় আমাদের দেশে আমরা আপাতত চিকিৎসাসেবাটি কম দামে পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি। আমাদের দেশে আইন [‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স’ ১৯৮২ এর ৪ ধারা] আছে, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মরত কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক অফিস চলাকালীন সময়ে প্রাইভেট মেডিকেলে প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।’ অর্থাৎ এই আইনের মাধ্যমে প্রকারান্তরে চিকিৎসকদেরকে প্রাইভেট চিকিৎসা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসাকে করে তোলা হয়েছে একটি দামি পণ্য। এমতাবস্থায় ‘সেবাধর্মী পেশা হিসেবে চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য যেন মুখ্য না হয়ে ওঠে সেজন্য একটি নীতিমালা’ তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে এবং আদালত থেকে রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে, ‘দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিক এন্ড ল্যাবরেটরিজ (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স’ ১৯৮২ এর ৪ ধারা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, অসংবিধানিক, বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে।
যারা চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের আদেশ চেয়ে রিট আবেদন করেছেন এবং রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত যে ইতিবাচক শুনানি দিয়েছেন তার জন্য উভয়পক্ষকে ধন্যবাদ জানাই এবং চিকিৎসাসেবাপ্রাপ্তি সহজ ও কম খরচে হওয়ার প্রত্যাশায় আছি, সমগ্র জাতির সঙ্গে। সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ হোক, এটা দেশের সকল মানুষেরই কাম্য।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com