1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৩০ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

জামালগঞ্জে দায়সারাভাবে চলছে বাঁধের কাজ

  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩টি ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। যথাযথ নীতিমালা অনুসরণ করছেন না পিআইসিরা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধস্থলে গিয়ে দেখা গেছে বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ অর্ধেকও করতে পারেন নি পিআইসিরা। যতটুকু বাঁধের কাজ হয়েছে, তাতেও কোনটার কাজই মানসম্মত নয়। বাঁধের উপরে থাকা ঘাস বন পরিষ্কার করা হচ্ছে না, দুরমুজ দেওয়া হচ্ছে না মোটেই। কোনো কোনো বাঁধে খুব কাছে থেকে মাটি উঠিয়ে বাঁধে দেওয়া হচ্ছে। দায়সারাভাবে থেমে থেমে চলছে বাঁধের কাজ। পাগনার হাওরের ৪২নং প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে বাঁধের অধিক অংশই কাজের বাকি রয়েছে। তাছাড়া বাঁধের উপরে গজিয়ে উঠা ঘন ঘাস-বন-ছন পরিষ্কার না করেই এলোমেলোভাবে মাটি ফেলা হচ্ছে।
এস্কেভেটর ৪২নং পিআইসির বাঁধের পাশে পড়ে থাকতে দেখা গেছে, তবে কার্যক্রম বন্ধ। এসময় পিআইসির দায়িত্বশীল কাউকে বাঁধস্থলে পাওয়া যায়নি। সাইনবোর্ডে পিআইসির মোবাইল নাম্বার না থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, ভাড়া করা লোক দিয়ে বাঁধের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হেলাফেলায় সেরে আসতে চাইছে পিআইসিরা।
জামালগঞ্জ উপজেলাধীন পাগনার হাওর উপ-প্রকল্পের ১.০০৪কি.মি. বাঁধের ভাঙ্গা বন্ধকরণ ও মেরামত কাজের দায়িত্বে রয়েছে ৪২নং পিআইসি। এবাঁধে এবছর বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ১৫ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাঁধের কাজ খুবই নিম্নমানের।
৮ ফেব্রুয়ারি ৪৩নং প্রকল্প স্থলে গিয়ে পিআইসি সদস্য সচিব অজিত সরকারকে পাওয়া যায়। তিনি বাঁধের কাজ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। জানাযায়, এ বাঁধের বরাদ্দ প্রায় ১০ লাখ টাকা। এই বাঁধের কাজের গুণগত মান নীতিমালা বিরোধী। ৪৪নং পিআইসির বাঁধে ঢালিয়া স্লুইসগেটের কাছাকাছি ভাঙ্গা বন্ধকরণ কাজে পিআইসির সদস্য সচিব একলিমুর রেজা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এই বাঁধে সবেমাত্র কাজ শুরু হয়েছে। কাদামাটি উত্তোলন করতে গিয়ে ৪৪নং পিআইসির সংগৃহীত এস্কেভেটরটি এসময় কাদামাটিতে দেবে যেতে দেখা গেছে। এই ঢালিয়ার ভাঙ্গাটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
অপরদিকে, ৪৫নং পিআইসির কাউকে বাঁধস্থলে পাওয়া যায়নি। ঘাস-বন-ছন আবর্জনাসহ এবাঁধে মাটি ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। এই বাঁধের অর্ধেক অংশে বাঁধের একেবারে গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধে দেওয়া হয়েছে। যতটুকু বাঁধের কাজ হয়েছে তাতে মোটেই দুরমুজ দেওয়া হয়নি। এলোমেলোভাবে বাঁধে মাটি ফেলে বাঁধটিকে নাজুক করে ফেলেছেন পিআইসি সভাপতি নজরুল ইসলাম। এই বাঁধে দুরমুজ দেওয়া হয়নি মোটেই, বাঁধের ভেতর অংশে ঘাস-বন-ছন আলাদা করা হয়নি, প্রয়োজনীয় স্লোভও দেওয়া হচ্ছে না। এই বাঁধের পিআইসি পাউবো নীতিমালা লংঘন করে বাঁধের কাজ দায়সারাভাবে করছেন। ০.৫৭৯ কি.মি. এই বাঁধে বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ১২লাখ টাকা।
৪৬নং বাঁধের পিআইসি সভাপতি নুরু মিয়া বলেন, তার বাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জামালগঞ্জের এসও নিহার রঞ্জন
দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলেন তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছেন এসও। তিনি আরো বলেন ৪৬নং পিআইসির উরারবাঁধ হচ্ছে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ২০১৭ সালে এই বাঁধ ভেঙে পাগনার হাওরের সমগ্র ফসল তলিয়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাঁধের এ বরাদ্দ যথাযথ নয় বলে দাবি করেন। তিনি আরো অভিযোগ জানিয়ে বলেন, পাশাপাশি ৪৫নং বাঁধে ১৮শ ফুটে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২ লাখ টাকা। অথচ তার ৪৬নং বাঁধে ৫ হাজার ৩শ ফুটের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা। বরাদ্দের ক্ষেত্রে এই বৈষম্যমূলক নীতি রহস্যজনক। তিনি এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করবেন এবং প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
বাঁধের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় স¤পর্কে জানতে বাঁধস্থলে থেকে মুঠোফোনে বাপাউবো’র দায়িত্বপ্রাপ্ত এসও নিহার রঞ্জন দাসের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য যে, পাগনার হাওরকে বেষ্টিত করে থাকা এই ৭টি বাঁধ একই এলাকায় পর্যায়ক্রমে রয়েছে। বাঁধগুলোর দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে রয়েছে স্থানীয় পিয়াইন নদী। উত্তরাংশে ভেতরের দিক থেকে রয়েছে সোনাফলা দিগন্ত জোড়া ধানের ক্ষেত পাগনার হাওর। এখনই ফসলের ক্ষেতে সোনার ধানের চারা গাছ গাঢ় সবুজ রং ধারণ করে নিয়েছে। কিন্তু দায়সারা পিআইসির দায়সারা বাঁধ নির্মাণ কৃষকের সকল স্বপ্নকে ভূলুণ্ঠিত করে দিতে পারে এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকগণ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com