মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::
দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর ওপর সেতু না থাকায় লক্ষাধিক মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ওই নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। কিন্তু যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও আজোবধি প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে খাসিয়ামারা নদীর ওপর এলাকার বাসিন্দারা বাঁশের সেতুতেই যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
নদীর পশ্চিমপাড়ে মাঠগাঁও এবং পূর্বপাড়ে ভাঙ্গাপাড়া গ্রাম। দুই গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে খাসিয়ামারা নদী। খাসিয়ামারা নদীর উভয় পাড়ের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ এই বাঁশের সেতু দিয়েই প্রতিদিন সুনামগঞ্জ জেলা শহরসহ ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় যাতায়াত করতে হয়। কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাঁশের সেতু ব্যবহার করে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টিপাত হলেই পাহাড়ি ঢলে নদীতে থাকে প্রচণ্ড স্রোত। দুই পাড়ের মানুষসহ শিক্ষার্থীরা তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাত নৌকায় নদী পার হতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, এই নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সাড়া দিচ্ছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা কামাল বলেন, শুষ্ক মওসুমে ৮ মাস এলাকার রোগী, চাকরিজীবী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে আসা-যাওয়া করতে সুবিধা হয় এই পথ দিয়ে। কিন্তু বর্ষায় নৌকায় পারাপার হতে হয়।
শুকনা মওসুম শুরু হলে নদীর স্রোতে কমে আসে, তখন বাঁশের সেতু কাজে লাগে। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ, শত শত মোটর সাইকেল এবং সিএনজি চলাচল করে থাকে।
লিয়াকতগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, খাসিয়ামারা নদী পারাপারে আমাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। প্রতিদিন এই বাঁশের সেতু দিয়েই যাতায়াত করি। কিন্তু বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হতে হয়।
এলাকাবাসী জানান, খাসিয়ামারা নদীর ওপর একটি সেতু হলে এলাকার লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য বদলে যেত। উন্নয়ন হতো মানুষের জীবনমানের। ভোগান্তিও কমে আসতো। ওই নদীর ওপর সেতু এখন সময়ের দাবি।
বাঁশের সেতুর টোল আদায়কারী শাকিল আহমদ জানান, খাসিয়ামারা নদীতে বছরে ৪ মাস নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হয়। পানি কমে গেলে বাঁশের মাচান দিয়ে সেতু তৈরি করি। এই সেতু দিয়ে প্রায় ৮ মাস মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। এতে আমাদের খরচ বাদে সামান্য লাভ হয়। আমরাও এই নদীর উপর সেতু চাই।
লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমীরুল হক বলেন, খাসিয়ামারা নদীর উপর সেতু নির্মাণ না হওয়ায় দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন, নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বোগলা, সুরমা ইউনিয়ন ছাড়াও ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ও ইসলামপুর ইউনিয়নের মানুষজন এই বাঁশের সেতু দিয়েই চলাচল করে থাকেন। মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে প্রতি বছর এই বাঁশের সেতু নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। শুনেছি একবার নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। কিন্তু এরপর আর কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যায়নি।