স্টাফ রিপোর্টার:
ক্যান্সার শনাক্তকরণ যন্ত্রের উদ্ভাবক অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত সুনামগঞ্জের তরুণ বিজ্ঞানী ড. জহিরুল আলম সিদ্দিকীকে নিয়ে গত রবিবার রাতে সান্ধ্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। সঞ্চালনায় ছিলেন লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সালেহ আহমদ।
বৈঠকে বিজ্ঞানী ড. জহিরুল আলম বলেন, আমরা আজকের শিশুকে মানবিক শিশু হিসেবে গড়ে তুলতে পারছিনা। শিশুদের নৈতিক ও মানবিক গুণে সমৃদ্ধ করতে হবে। যার মধ্যে থাকবে দেশপ্রেম। কেননা একটা মানুষ যদি তার দেশটাকে না ভালোবাসে তার দ্বারা অন্যায় কাজ হবেই। অনেক শিশু বইকে ভয় পায়। শিশুদের মন থেকে ভয় সরাতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ হতে হবে আনন্দমুখর। তিনি বলেন, পড়াশোনার উদ্দেশ্য জিপিএ ৫ অর্জন নয়। শুধু পড়াশোনা করেই প্রকৃত মানুষ হওয়া যাবে না। মাথার জ্ঞান আর হার্টের সম্পর্ক হলেই কেবল মানুষ প্রকৃত মানুষ হতে পারবে।
তিনি বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখার আহ্বান জানান।
বিজ্ঞানী জহিরুল আলম সিদ্দিকী আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমাদের মৌলিক অর্জন। এটাকে অস্বীকার করার উপায় কারো নেই। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখাপড়া করে তাদের পিছনে রাষ্ট্রের প্রচুর ব্যয় হয়। কিন্তু তারা বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে গিয়ে সেটা ভুলে যায়।
তিনি বলেন, তারা উন্নত জীবন যাপনের জন্য স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশ যাক ভালো কথা। কিন্তু দেশের উন্নয়নে অনেককে তেমন কিছু করতে দেখা যায় না। দেশের রেমিটেন্স বৃদ্ধিতে তাদের কোন ভূমিকা নেই। বরং দেশ থেকে স¤পত্তি বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যান তারা। এই মানসিকতা থেকে বিদেশে বসবাসরত বিশিষ্ট বাংলাদেশিদের সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য ভাবতে হবে। একা রাজনীতিবিদদের দোষারোপ করে লাভ নেই। রাজনীতিবিদরা একা সবকিছু পরিবর্তন করতে পারবেন না। তিনি মেধাবী তরুণদের দেশে ধরে রাখতে সরকারকে গবেষণাখাতে বিনিয়োগ ও ইউনিভার্সিটি কেন্দ্রিক গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানান।
তাঁর ক্যান্সার শনাক্তকরণ যন্ত্রের উদ্ভাবন বিষয়ে বলেন, আমিমূলক রসায়নবিদ। কিন্তু আমার এক আত্মীয় ক্যান্সারে মারা যাবার পর আমি ভাবতে থাকি আসলে কিভাবে সহজে ক্যানসার শনাক্ত করা যায়। সেটা নিয়ে ভাবতে গিয়েই আমি এই কাজ করি। ক্যান্সার শনাক্তকরণ যন্ত্র উদ্ভাবনের পর বিশ্বের নামি দামি জার্নালে আমার খবরে বলা হয়েছিল ‘বাংলাদেশের বিজ্ঞানীর ক্যান্সার শনাক্তকরণ যন্ত্রের উদ্ভাবন’। আমি দেশকে উপস্থাপন করতে পেরে আনন্দিত।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আলী আমজদ, অ্যাড. শফিকুল আলম, যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, লেখক সুখেন্দু সেন, কবি ইকবাল কাগজী, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সাংবাদিক ম ফ র ফোরকান, অ্যাড. শুকুর আলী, অ্যাড. এনাম আহমদ, সাংবাদিক শামস শামীম, প্রভাষক মশিউর রহমান, এনামুল কবীর প্রমুখ।