বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের খবরে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সরব থাকলেও অন্যতম বড় দল বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা একেবারেই নীরব। বিএনপি’র নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে তারা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছেনা। দলের ইঙ্গিত না থাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীরাও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে মাঠের অবস্থা বিবেচনা করে বিএনপির কিছু প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।
গত ৩০ ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে সারাদেশের ন্যায় সুনামগঞ্জে বিএনপির ৫ প্রার্থী মোটামুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম হয়েছেন। ব্যবধান বেশি থাকলেও সবাই সম্মানজনক ভোট পেয়েছেন। নির্বাচনের আগেও তারা প্রকাশ্যে মিছিল, নির্বাচনী সভা করেছেন। পোস্টার-ব্যানার ও বিলবোর্ডও টাঙিয়েছিলেন সর্বত্র। নির্বাচনের দিন বিএনপির ৫ প্রার্থীর কেউই নির্বাচন বর্জন না করলেও নির্বাচন শেষে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। নির্বাচনের পরদিন তারা সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থী অ্যাডভোকেট ফজলুল হক আছপিয়ার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা ভোট কারচুপি, রাতে ভোটবাক্স ভরে ফেলাসহ নানা অভিযোগ করেছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে ৫ প্রার্থী আগামীতে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার অঙ্গীকার করে কেন্দ্রকেও নির্বাচনে না যেতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এদিকে মার্চে প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এই খবরে জোর তৎপরতা শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ১১ উপজেলায়ই হেভিওয়েট একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে ঝাঁকে ঝাঁকে অনেক নতুন মুখকেও দেখা গেছে। তারা পোস্টার, ব্যানার বিলবোর্ডের মাধ্যমে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। প্রতিটি উপজেলায়ই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ছাত্রলীগের সাবেক তারকা নেতাদেরও মাঠে প্রচারণা শুরু করতে দেখা গেছে। তারা তৃণমূলে প্রার্থীতার খবর ছড়িয়ে দলীয় মনোনয়নের জন্য লবিংও করছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে মনোনয়ন বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, যে হারে প্রার্থীতা ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন মনোনয়ন না পেলে তাদের অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন। তাছাড়া মনোনয়ন নিয়ে চরম কোন্দলও দেখা দিতে পারে।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর শওকত বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে আমরা আর কোন ধরনের প্রহসনের নির্বাচনে যাবনা। গত জাতীয় নির্বাচনের পরপরই সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের ৫ প্রার্থী সেই ঘোষণা দিয়েছেন। কেন্দ্র থেকেও আমাদের নির্বাচনে আমাদের না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, জাতীয় নির্বাচনে নৌকার জোয়ারের পর তৃণমূল নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। তাই অনেকেই দলের প্রার্থী হতে চাচ্ছেন। তবে আমাদের দাবি জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা, দলের প্রতি আত্মত্যাগের কথা বিবেচনা করে মনোনয়ন দেয়া হোক। জননেত্রী শেখ হাসিনাও এটা চাচ্ছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনের আগাম প্রচারণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তৃণমূল মাঠকে সরগরম করে রেখেছেন।