মাহমুদুর রহমান তারেক ::
আগামী মাসেই নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তবে তফসিল ঘোষণার আগেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেমে পড়েছেন মাঠে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় আ.লীগের প্রার্থী জটে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। প্রার্থী সংখ্যা বেশি হওয়ায় সাধারণ নেতাকর্মীরা প্রচারণায় নামছেন কম।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনটি পদের মধ্যে দুটিই বিএনপি-জামায়াতের দখলে। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদটি বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের দখলে। অন্যদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শুধুমাত্র আ.লীগের দখলে। এর মধ্যে গত দু’টি নির্বাচনে লাগাতার জয়লাভ করেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন।
আসন্ন নির্বাচনে সদর উপজেলার তিনটি জনপ্রতিনিধির পদই দখলে নিতে চায় আওয়ামী লীগ। এ জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। প্রার্থীদের তালিকায় আ.লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ নেতারাও আছেন।
আ.লীগ সূত্রে জানা গেছে, আ.লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যারা ইতিমধ্যেই আলোচনায় এসেছেন তারা হলেন সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন, জেলা আ.লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মণীষ কান্দি দে মিন্টু, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, জেলা আ.লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদ সদস্য সৈয়দ তারিক হাসান দাউদ (দাউদ পীর), জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মুবিন। এছাড়া দুই জন প্রভাবশালী আ.লীগ নেতার নাম শোনা গেলেও তারা এই মুহূর্তে মুখ খুলতে রাজি হননি।
এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে জেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম সেরুল, সদর যুবলীগের সভাপতি এহসান আহমেদ উজ্জ্বল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আবুল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল আলম খালেকসহ বেশ কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুবের আহমদ অপু বলেন, জীবনের অধিকাংশ সময়ই রাজনীতির পেছনে ব্যয় করেছি। আ.লীগের দুঃসময়ে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃত্বে ছিলাম, আছি। রাজপথ, মিছিল, সমাবেশ, সাধারণ নেতাকর্মীরাই আমার ঠিকানা। আমি চেয়ারম্যান পদে আ.লীগের সমর্থন চাইবো এবং ইতিমধ্যে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছি।
জেলা আ.লীগের সদস্য সৈয়দ তারিক হাসান দাউদ (দাউদ পীর) বলেন, আমি সুনামগঞ্জ শহরে বেড়ে উঠেছি। আমি এবং আমার পরিবার সম্পর্কে সবাই জানেন। আমি সব সময় এলাকার মানুষের সঙ্গে আছি। আমি উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ নই। নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানিত সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক দু’জনের সাথেই কথা বলেছি। তাদের পরামর্শ ও আশীর্বাদ নিয়েছি। পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করে মাঠে নেমেছি। কেন্দ্রীয় নেতারাই আমাকে মাঠে কাজ করতে বলেছেন। আশা করি আমি সদর উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন পাব এবং নৌকা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেব।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদটি আ.লীগের হাতছাড়া। ফলে সাধারণ মানুষ সেবা নিতে আসলে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। আমি চাই চেয়ারম্যান পদটি নির্বাচনে মাধ্যমে আ.লীগ জয়ী হোক এবং সাধারণ মানুুষ এখান থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার দেয়া নানা সেবা নিয়ে ফিরে যাক। আমি সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেছি। সাধারণ মানুষের কাছে শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকা-ের বার্তা তোলে ধরছি। দল সমর্থন দিলে আশা করছি জয়লাভ করতে পারবো।
জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন নির্বাচন করি, তারা চাপ দিচ্ছেন নির্বাচনে আসার জন্য। আমি তাদের এই চাপ, অনুরোধ, ভালোবাসাকে সম্মান করি। দল সমর্থন দিলে অবশ্যই বিপুল ভোটে নির্বাচনে জয়লাভ করবো।
জেলা আ.লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নিগার সুলতানা কেয়া বলেন, আমিসহ আমার পুরো পরিবার আ.লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। গত ৫টি বছর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে চেষ্টা করেছি সাধারণ মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার। সাধারণ মানুষের সুখ, দুঃখে নিজেই ছুটে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। আশা করছি দল থেকে চেয়ারম্যান পদে সমর্থন পাব।