1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

দোয়ারার চিলাই নদীর ফসলরক্ষা বাঁধে প্রকল্প নেই : অরক্ষিত গোজাউড়া হাওর

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০১৯


মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী ::

এ বছরও হচ্ছেনা দোয়ারাবাজার উপজেলার পাহাড়ি নদী চিলাই-এর ফসলরক্ষা বাঁধ। চলতি বছরে চিলাই নদীর ডান তীরের উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গোজাউড়া গ্রাম হতে সুন্দরপশী পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণে কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করায় অরক্ষিতই থেকে যাচ্ছে হাওর। ফলে অতীতের ন্যায় এবারও কপাল পুড়বে গোজাউড়া হাওরপাড়ের কৃষকদের। প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়ে ওই হাওরের হাজার হাজার হেক্টর বোরো ও আমন ফসলহানি ঘটে। গত বছর পাহাড়িঢলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এবছর ফসল রক্ষাবাঁধ না হওয়ায় প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর বোরো-আমন ফসলহানির শঙ্কায় রয়েছেন এখানকার হাজার হাজার কৃষক।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে ফসলরক্ষা বাঁধে উপজেলায় ২ কোটি ১১ লাখ ৬ হাজার টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মোট ২৩টি প্রকল্পের মধ্যে বর্তমানে ২০টি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। পাহাড়িঢলে সৃষ্ট অকাল বন্যা হতে চলতি বছরে বোরো ফসল রক্ষায় বিভিন্ন হাওরে সংশ্লিষ্ট পিআইসি ইতোমধ্যে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলায় ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের নামে অপ্রয়োজনীয় অনেক বেড়িবাঁধের প্রকল্প গ্রহণ করে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তী কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে এবং বাঁধের প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখে এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিলও করা হয়েছে। অথচ এবছরও সোনালী ফসলের মাঠ হিসেবে খ্যাত উপজেলার গোজাউড়া হাওরের ফসল রক্ষায় চিলাই নদীর ডান তীরের বেড়িবাঁধ নির্মাণে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। শেষমেষ এখানে ফসল রক্ষাবাঁধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে গোজাউড়া হাওরসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল।
উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বরকতনগর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম ও জমসেদ আলী জানান, চলতি বছরে গোজাউড়া হাওরের ফসল রক্ষায় চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ না হওয়ায় কপাল পুড়বে এখানকার হাজার হাজার কৃষকদের। পাহাড়ি ঢলে অকাল বন্যায় ফসলহানি ঘটে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষয়তির সম্মুখীন হবো আমরা।
গোজাউড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান মনাই বলেন, ফসলরক্ষা বাঁধ না হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে এখন আমাদের গোজাউড়া হাওর। অকাল বন্যায় আমাদের একমাত্র সম্বল বোরো ফসল বিনষ্ট হলে আমাদের বাঁচার উপায় থাকবেনা।
ইউপি সদস্য আলতাব হোসেন বলেন, অতীতে ওই হাওরের ফসল রক্ষায় এখানে বেড়িবাঁধ দেওয়া হলেও গত বছর এবং চলতি বছরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা হয়নি। আর এ কারণে হাওরপাড়ের কৃষকরা এখন আতঙ্কে রয়েছেন।
এছাড়া মহব্বতপুর, শিমুলতলা, কাওয়াঘর, রাজনগর গ্রামের কৃষকরা বলেছেন, চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ না হলে গোজাউড়া হাওরের হাজার হাজার কৃষকদের জীবন জীবিকার শেষ সম্বল বোরো ফসলহানি ঘটবে। আর আমাদের গোলায় সোনালী ফসল না উঠাতে পারলে না খেয়ে মরতে হবে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার বলেন, চিলাই নদীর ডান তীরের গোজাউড়া হতে সুন্দরপশী গ্রাম পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধ না দিলে অকাল বন্যায় হতে কোনোভাবেই হাওরের সোনালী ফসল রক্ষা করা যাবেনা। আমি এখানকার কৃষকদের পক্ষে এখানে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছি। দ্রুত প্রকল্প গ্রহণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মিত না হলে বৃষ্টি হলেই পাহাড়িঢল নেমে কৃষকদের বোরো ফসল বিনষ্ট হয়ে যাবে।
পাউবো’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, স্থানীয় কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে চিলাই নদীর ডান তীরে ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মাণের প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, চিলাই নদীর ডান তীরে গোজাউড়া হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কৃষকদের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। সরেজমিনে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছি। এখানে বাঁধের প্রয়োজনীয়তা আছে। প্রকল্প গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com