সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
৩০ ডিসেম্বর ‘ভোট হয়নি’ দাবি করে নতুন নির্বাচনের পথ বের করতে সরকারকে ‘জাতীয় সংলাপ’ ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলার এক সপ্তাহ পর বৃহ¯পতিবার ঢাকায় নিজের দল গণফোরামের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপিকে নিয়ে গঠিত ঐক্যফ্রন্ট গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আটটি আসনে জিতেছে, অধিকাংশ আসনে তাদের প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পেয়েছে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
কামাল সরকারের উদ্দেশে বলেন, “৩০ ডিসেম্বর যেটা হয়েছে, এটাকে কি অবাধ নির্বাচন হয়েছে কেউ বলবে? আসুন বছরের প্রথম দিকেই সঙ্কট সৃষ্টি না করে সবার সঙ্গে জাতীয় সংলাপ করুন। সংলাপের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হোক, কীভাবে আমরা সংবিধানকে মেনে নির্বাচন করে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার গঠন করব।”
সবাইকে নিয়ে একটি সংলাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে নিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট; তবে তা কবে হবে, সেই দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।
ভোট নিয়ে কামাল বলেন, “আমি ভাবতে পারিনি ৩০ ডিসেম্বরের যে ঘটনা, সেটা ৪৮ বছরের পরে এটা দেখতে হচ্ছে। আমি তো সরলভাবে বলেছিলাম, ভাই সকালে সকালে গিয়ে ভোট দেবেন। টেলিভিশন বলছে, কামাল হোসেন বুঝতে পারছেন না ঘটনা তো রাতেই ঘটে গেছে। ২৯ তারিখ রাতেই।”
অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের অভিযোগ, ভোটের আগের রাতেই পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ব্যালটবাক্স ভর্তি করে রাখা হয়েছিল।
কামাল বলেন, “যেভাবে হল আমরা কেউ টেরও পেলাম না যে আমাদের ভোট হয়ে যাচ্ছে। এটা কেন এভাবে করতে হবে? এরকম অস্বাভাবিক কাজ কেন হচ্ছে? এর থেকে ঘোষণা দিয়ে দেন- থার্ড টার্মের জন্য একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছেন, তিনশ সদস্য সাংসদ হয়ে গেছেন। এটা খেলা না কি? ১৭ কোটি মানুষকে নিয়ে কি খেলা করা যায়? রাষ্ট্র নিয়ে এভাবে খেলা করা চলে না। যারা এসব করছে, তারা না বুঝে করছে। আমি মনে করি, মানসিকভাবে ভারসাম্য না হারালে কেউ এসব করতে পারে না।”
কামাল বলেন, “নির্বাচনে সরাসরি মানুষ ভোট দেবে, ফলাফল হবে। এটা অন্য কোনো কায়দায় নিলে তা দেশে স্থিতিশীলতা আনে না, বৈধতাও আনে না। এই ধরনের চালাকির অনুষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু বলতেন রাজ চালাকি। আমরা রাজনীতি থেকে সরে যাচ্ছি রাজ চালাকিতে। আমি বলব, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা রাজ চালাকির একটা সুন্দর উদাহরণ। আমরা বলব, রাজ চালাকি থেকে বিরত থাকুন, জনগণের সামনে সব কিছু তুলে ধরুন। সংবিধান অনুযায়ী, আলাপ-আলোচনা করে যা করার করুন।”
জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই আলোচনা সভা হয়।