1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বুদ্ধিজীবী হত্যার উদ্দেশ্য ছিল জাতিকে জড়ধী করা

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

মানবসমাজে যে-দিন থেকে ধর্ম ও রাজনীতির সূত্রপাত সেদিন থেকেই বুদ্ধিজীবী হত্যার শুরু। হিপ্পাসাস, জুয়ান অব আর্ক, সক্রেটিস, যিশু খৃস্ট, ব্রুনো, মার্টিন লুথার কিং, চে গুয়েভারা, ফেদরিকা লোরকা, আলেন্দে, মোহন দাস করমদাঁদ গান্ধী, শেখ মুজিব, ইন্দিরা গান্ধি, বেনজির ভুট্টো এঁদের প্রত্যেককেই কোনও না কোনও অজুহাতে কোনও না কোনওভাবে হত্যা করা হয়েছে। হিপ্পাসাসকে হত্যা কার হয়েছিল একটি ব্যতিক্রমী কারণে, শিক্ষাগুরুর জ্যামিতিক উপপাদ্যের ভুল ধারার জন্যে। বাদ বাকি সবকটি হত্যকা-ের হেতু ঘুরেফিরে কোনও না কোনওভাবে ধর্মীয় কিংবা রাজনীতিক বৈরিতা। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশ রাষ্ট্র কিংবা জনপদে এমন মানুষ কর্তক মানুষ হত্যা আগেও চলেছে এবং এখনও চলছে। মানুষ কর্তৃক মানুষ হত্যার এই বৈশিষ্ট্য মানব ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ও স্বাভাবিক লক্ষণ। যে-কোনও দেশ-রাষ্ট্র-সমাজে প্রচলিত ধর্ম-রাজনীতি ইত্যাদির কিংবা বিশেষ ক্ষেত্রে শ্রেণিস্বার্থ রক্ষার্থে এই হত্যা সাধারণত সংঘটিত হয়ে থাকে। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে আইনি পদ্ধতি প্রয়োগ করে এসব হত্যাকা- কার্যকর হয়েছে, তার দৃষ্টান্তও পৃথিবীতে কম নয়। সক্রেটিস এবং যীশু খৃস্ট এবং কর্নেল তাহেরকে বৈাচারিক পদ্ধতি প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে। চে গুয়েভারা, ফেদরিকা লোরকা, শেখ মুজিব, ইন্দিরা গান্ধিকে হত্যা কার হয়েছে বিচারবহির্ভূত, যাকে বলে, সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী পদ্ধতিতে। এইসব হত্যাকা-কে মানব ইতিহাসে সবচেয় বীভৎস হত্যাকা- বলে অভিহিত করা হয়।
আজ বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস। ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের আগে পরাজিত শত্রুরা বিশেষ উদ্দশ্য সাধনে বুদ্ধিজীবী হত্যা সংঘটিত করে। তারা কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, চলচিত্রকার, সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক বিজ্ঞানী, দার্শনিকদেরকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। সক্রেটিস থেকে মুজিব হত্যা পর্যন্ত সকল হত্যা সংঘটিত হয়েছে, স্থূল বিবেচনায়, প্রবল রাজনীতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত ব্যক্তি বিশেষকে সরিয়ে দেওয়ার অভিপ্রায়ে। সক্রেটিস বা মুজিবকে হত্যার পেছনে একটি জাতিকে জড়ধীতে পরিণত করার পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু ১৯৭১-য়ে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনার পেছনে প্রধান কারণ ছিল বাঙালি জাতিকে জড়ধীতে পরিণত করার দুরভিসন্ধি, আগামী দিনে যাতে এই জাতি বুদ্ধিহীন মূর্খজাতিতে পরিণত হয় এবং এই জাতিকে সহজে শাসন ও শোষণ করা যায়, গোলাম বানিয়ে রাখা যায়।
সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় এই যে, যারা এই পরিকল্পনাটি করেছিলে তারা বাঙালি জাতিরই একটি বিচ্ছিন্ন অংশ। তাদের সেই পরিকল্পনাটি কার্যত সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং যারা এই হত্যাকা-ের পরিকল্পনা করেছিল ও হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদেরকে জাতি কূলাঙ্গার বলে ইতিহাসে চিহ্নিত করে রেখেছে। আজ বুদ্ধিজীবী দিবসে সকল শহিদ বুদ্ধিজীবীর স্মৃতিতর্পণ করছি। জাতিকে ভুলে গেলে চলবে না যে, একাত্তরের মধ্যডিসেম্বরের ঘাতকদের উত্তরসূরিরা সমাজে আজও ঘাপটি মেরে আছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com