বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে ৩টি আসনে আ.লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগে নেমেছেন। পুরনো ক্ষোভ অভিমান ভুলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নামায় সাধারণ নেতাকর্মীরা উজ্জিবিত হয়েছেন। আ.লীগ নেতাদের দাবি, বঞ্চিতরা মাঠে নামায় জয়ের পথে একদাপ এগিয়ে যাচ্ছেন দলীয় প্রার্থীরা।
সুনামগঞ্জ-১(তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধর্মপাশা) আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন দুই ডজন প্রার্থী। একডজন প্রার্থী ডামি হলেও আরো এক ডজন ছিলেন দীর্ঘ দিন ধরেই মাঠে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা মনোনয়নের জন্য মরিয়া ছিলেন। কিন্তু সবাইকে পেছনে ফেলে গত দুই বারের মত মনোনয়ন পান বর্তমান সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন। প্রথম দুই দিন প্রচারণায় না থাকলেও অবশেষে মাঠে নামতে শুরু করেছেন মনোনয়ন বঞ্চিতরা। মহাজোট থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বিকল্পধারার নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম চৌধুরী। জোটের মনোনয়ন না পেলেও অনেকটা কোমড় বেঁধেই রতনের পক্ষে নেমেছেন রফিকুল চৌধুরী। বুধবার থেকে আরেক হেভিওয়েট মনোনয়ন বঞ্চিত কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেত্রী শামীমা শাহরিয়ার নৌকার পক্ষে মাঠে নেমেছেন। জেলা আ.লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম ও ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সভা, সমাবেশ শুরু করেছেন।
সুনামগঞ্জ-৩(দক্ষিণসুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর) আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন স্বাধীন বাংলার প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম, যুক্তরাজ্য আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, জেলা আ.লীগের সহসভাপতি সৈয়দ আবুল কাসেমসহ অর্ধডজন প্রার্থী। কিন্তু আ.লীগ ভরসা রাখে ক্লিন ইমেজের প্রার্থী অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের উপর। নৌকার মাঝি এম এ মান্নান মনোনয়ন বঞ্চিত আজিজুস সামাদ ডনের ঢাকার বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় ডন ঘোষণা দেন তিনি নৌকা এবং মান্নানের পক্ষেই থাকবেন। এর আগে হাজী আবুল কালাম, সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বেশ জোরেশোরে নৌকার প্রার্থী মান্নানের পক্ষে নেমেছেন।
সুনামগঞ্জ-৫(ছাতক-দোয়ারাবাজারে) আসনে আ.লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন জেলা আ.লীগ নেতা শামীম, ফরিদ আহমদ তারেক সহ কয়েকজন। আ.লীগ নৌকা মাঝি হিসেবে বরাবরের মতই ভরসো রাখে মুহিবুর রহমান মানিকে। মনোনয়ন বঞ্চিত ফরিদ আহমদ তারেক দোয়ারাবাজারে আ.লীগের জনসভায় পুরনো সব ভোদভেদ ভুলে নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দেন এবং অবিরাম গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
ফরিদ আহমদ তারেক বলেন, নৌকার মাঝি মুহিবুর রহমান মানিকের পক্ষে নিন-রাত প্রচারণা, গণসংযোগ চালাচ্ছি, শেখ হাসিনার হাতে কে শক্তিশারী করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ৩০ তারিখ ছাতক-দোয়ারায় নৌকা বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেত্রী অ্যাড. শামীমা শাহিরয়ার বলেন, বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনার নৌকা, আ.লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চাইলে বন্ধুবন্ধুর নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে, সবাই মিলে নৌকার পক্ষে কাজ করতে হবে। নৌকার পক্ষে নেতাকর্মীরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
জেলা আ.লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুনামগঞ্জের ৫টি আসনেই আ.লীগ ও মহজোটের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা মনোনয়ন বঞ্চিতদের সঙ্গে যোগযোগই করছেন না। মনোনয়ন বঞ্চিতরা দলীয় স্বার্থেই প্রচারণা, গণসংযোগ করছেন।
জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুনেদ আহমদ বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম, কিন্তু পাইনি। দল জাপার প্রার্থীকে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে। মনোনয়ন না পেলেও দিন-রাত মহজোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। মহাজোটের প্রার্থী মানেই শেখ হাসিনার প্রার্থী-নৌকার প্রার্থী। আমাদের মহাজোটের প্রার্থী জয়ী করাইতে হবে। দলীয় নেতাকর্মীরাও উজ্জিবীত।