স্টাফ রিপোর্টার ::
দীর্ঘ এক দশক ধরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পৈন্দা নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের মানুষ। বিভিন্ন সময়ে এমপিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেননি। নির্বাচনী মুলা ঝুলিয়ে তারা কার্য সিদ্ধির পরে প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গেছেন বলে মনে করেন এলাকাবাসী। তবে কেউ কেউ ব্যক্তিগত সম্পর্কের জেরে ১৪ গ্রামের বদলে দুটি গ্রামের মানুষের সুবিদা হয় এমন স্থানে সেতু নির্মাণের অনুমোদন করিয়ে সেটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। এতে ক্ষুব্দ ১৪ গ্রামের মানুষ। সচেতন মহল জানিয়েছেন দাবিটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় দলমত নির্বিশেষে এলাকার ১৪টি গ্রামের মানুষ সংক্ষুব্দ হয়ে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিতে পারেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে মোহনপুর ইউনিয়ন গত এক দশক আগে ভেঙ্গে কাঠইর নামে আরেকটি ইউনিয়ন গঠিত হয়েছে। সুরমা নদী কেন্দ্রিক ১৬টি গ্রাম নিয়ে গঠিত মোহনপুর ইউনিয়ন। অন্যদিকে হাওর বেষ্টিত গ্রামগুলো নিয়ে কাঠইর ইউনিয়ন। মোহনপুর ইউনিয়নের ১৬ গ্রামের মধ্যে ১৪টি গ্রামই পড়েছে সুরমা নদীর দুই তীরে। সুরমা নদীর শাখা নদী (পুরান সুরমা) পৈন্দা গ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই ১৪ গ্রামের মানুষের সুবিদার্থে এলাকার মানুষ পৈন্দা গ্রামেই সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের মতে পৈন্দা গ্রামে সেতুটি নির্মিত হলে মোহনপুর ইউনিনের ১৪ গ্রামের মানুষ ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে জেলা শহরে পৌছতে পারবে। এতে তাদের খরচ ও সময় কমবে। এ দাবিতে জয়নগর, পৈন্দাসহ বিভিন্ন স্থানে এ নিয়ে মানববন্ধন-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৈন্দা গ্রামে সেতু নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে সুপারিশ করেছেন প্রয়াত সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তসহ বর্তমান অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। কিন্তু ভৈষভেড় নামের একটি গ্রামের সুবিদার্থে পৈন্দার বদলে ১৪ গ্রামের মানুষকে পাশ কাটিয়ে রাবারবাড়ি গ্রামে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় সাংসদ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ সম্প্রতি রাবারবাড়িতে সেতু নির্মাণের প্রস্তুত সম্পন্ন করেছেন। নানা স্থাপনাও অপসারণ হয়েছে। এ ঘটনায় কিছুদিন ধরেই ১৪ গ্রামের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কাঙ্খিত স্থানে সেতুটি নির্মিত না হওয়ায় আপামর মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকেই। তবে পীর মিসবাহ আগামীতে পৈন্দা গ্রামেও সেতু নির্মিত হবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বস্থ করলেও এলাকাবাসী আশ্বস্থ হতে পারছেন না। তারা জানিয়েছেন দেড় কি.মিটারের মধ্যে দুটি বৃহত্তম সেতু নির্মাণ আদৌ সম্ভব নয়। কারণ এতে সরকার বরাদ্দ দিবেনা।
পৈন্দা গ্রামের যুবক ও আইনজীবী সহকারি আলমগীর আলম বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে পৈন্দা গ্রামে সেতু নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। বিভিন্ন স্থানে আবেদন নিবেদনও করেছি। কিন্তু আমাদের পৈন্দার বদলে একটি গ্রামের সুবিদার কথা বিবেচনা করে পাশের গ্রামে সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এবার জনগণ ক্ষুব্দ হয়ে ব্যালটে জবাব দিতে পারেন।
পৈন্দা গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বী, সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ এই প্রতিবেদককে কিছুদিন আগে জানান, তিনি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও এমএ মান্নানের লিখিত সুপারিশ এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধির ইচ্চের কারণে পৈন্দার বদলে একটি গ্রামের সুবিদার্থে রাবারবাড়িতে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ কারণে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ।