সমুদ্রবিজ্ঞানবিষয়ক পোস্টার প্রদর্শনী করা হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে। গতকাল প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক ‘প্রথম আলো’ পত্রিকায় সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। তা হোক। এটা খারাপ কীছু নয়। সেটা নিয়ে বিস্তারিত বলার অবকাশ এখানে নেই। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানুষেরা সমুদ্রবিজ্ঞানবিষয়ে ব্যাপক জ্ঞান লাভে সমর্থ হোন তা যেমন প্রত্যাশিত একটি বিষয়, তেমনি হাওরবিজ্ঞানবিষয়ে তাঁরা জ্ঞানার্জন করুন সেটাও অপ্যত্যাশিত বিষয় হতে পারে না, কোনও মতেই। সিলেট সমুদ্রপাড়ের নয় হাওরপাড়ের একটি শহর। এখানে সমুদ্র নয় বরং হাওর বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করা বা তার সার্বিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই পরিবেশগত কারণে স্বাভাবিক ও বেশি সঙ্গত। প্রকৃতির সন্তান হিসেবে মানুষ প্রকৃতিকে যতোটা জানতে পেরেছে, প্রকৃতির নিয়মকে যতোটা আয়ত্ব করতে পেরেছে ততোটাই প্রকৃতিকে নিজের কল্যাণে নিয়োজিত করতে পেরে জীবনকে উন্নত করতে পেরেছে। প্রকৃতির অংশ হিসেবে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলেই মানুষ মানুষ হতে পেরেছে। প্রকৃতিকে না জেনে, প্রকৃতির নিয়মকে কাজে না লাগিয়ে মানুষের জীবনকে উন্নত করার কোনও উপায় নেই। প্রাকৃতিক পরিবেশের বাস্তবতার সঙ্গে মিলেমিশে মানুষ তার জৈব-অস্তিত্বকে ধারণ করে থাকে। মানুষকে তাই নিজের অস্তিত্বকে রক্ষার স্বার্থেই প্রকৃতিকে, প্রাকৃতিক পরিবেশকে, প্রাকৃতিক পরিবেশের নিয়মকে সর্বাগ্রে জানতে হয়। মানুষের জন্য পৃথিবীতে বেঁচে থাকার প্রাথমিক শর্ত এটা। এই কারণে সিলেটে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে হাওরবিজ্ঞানবিষয়ে একটি অনুষদ চালু হওয়ার বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাওয়াটা মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়। তাছাড়া শোনা যায় এখানে প্রথমে হাওরবিজ্ঞানবিষয়ক একটি অনুষদ খোলার প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে হাওরের স্থলে সমুদ্রকে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। সে যাই হোক । সমুদ্রবিজ্ঞানের বিরোধিতা করছি না বলে যে হাওরবিজ্ঞানের বিরোধিতা করতে হবে এমনটা তো হতে পারে না, আসলে এমন বিরোধিতা সমীচীন হবে না কোনও যুক্তিতেই। বরং আমরা সমগ্র হাওরাঞ্চলের পক্ষ থেকে হাওরবিজ্ঞানবিষয়ে আলাদা একটি অনুষদ খোলার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুনজর আকর্ষণ করে যুক্তি প্রদর্শন করতে পারি এবং প্রকারান্তরে সেটা হারোঞ্চলের একটি দাবি হিসেবে পর্যবশিত হতে পারে।