বিশেষ প্রতিনিধি::
রাজনীতির মাঠে যেমন উত্তেজনা ছিল তেমন ছিল আশঙ্কার মেঘ। সেই আশঙ্কার মেঘ কেটে গিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বা বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার। উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন দুই বড় দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। প্রান্তিক জনপদ সুনামগঞ্জেও সেই উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকায় অবস্থানসহ এলাকায় থেকে কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের মনোনয়ন উত্তোলন ও জমা নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সুনামগঞ্জের ৫টি আসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির অর্ধ শতাধিকের উপরে মনোনয়ন প্রত্যাশী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আরো কয়েকজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এদিকে সাধারণ ভোটাররা সবদল নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেওয়ায় একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের প্রতীক্ষায় আছেন। তারা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জানা গেছে মনোনয়নের জন্য নেতারা এখন ঢাকায় অবস্থান করলেও রাজনৈতিক মাঠ শুন্য নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে কর্মীরা মাঠে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। তারা এখন প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সরেজমিন নির্বাচনী এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে প্রচারণায় এগিয়ে আছে আওয়ামী লীগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বাস্তবেও তারা প্রচারণায় এগিয়ে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়নের সচিত্র ও দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনার মাধ্যমে হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই প্রচারণায় প্রতিটি আসনের উন্নয়নচিত্র বিভিন্ন ফেসইসবুক গ্রুপ ও পেইজের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে প্রচারণার মাধ্যমে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা। তাছাড়া প্রার্থীদের সমর্থকরাও তাদের ছবি দিয়ে প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে এই ঘোষণায় নির্বাচনী মাঠের হাওয়া বইছে জোরেসুরে। তাদের কর্মী সমর্থকরাও খুশি। তারা আশা করছেন এই নির্বাচনের মাধ্যমে ভঙ্গুর বিএনপি ঘুরে দাড়াবে।
দিরাই মজলিসপুর গ্রামের শেরন মিয়া বলেন, গত নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশ ছিলনা। এবার বিএনপি নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেওয়ায় মাঠ গরম হয়ে গেছে। মানুষের মধ্যেও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। ভোট নিরপেক্ষ হলে উৎসব বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
দিরাই উপজেলার হারনপুর গ্রামের ভোটার অরুনা দাস বলেন, আমরা চাই শান্তিতে ভোট দিতে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে। ভোটের পরে যাতে কোন সংঘাতের সৃষ্টি না হয় সেদিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান তিনি।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হেলাল বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা এখন উজ্জীবিত। নির্বাচনের ঘোষণা আসায় সবাই এখন দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে সুনামগঞ্জের অধিকাংশ আসনেই বিএনপি জয়ী হবে। আমাদের আশঙ্কা আছে নির্বাচন নিয়ে। তবে আমরা মাঠ ছাড়বনা।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আতাউর রহমান বলেন, উন্নয়নের কারণেই আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে। কারণ স্বাধীনতার পরে এমন উন্নয়ন হয়নি জেলার কোথাও। সব আসনেই উন্নয়নের জোয়ার বইছে। বিশেষ করে আমাদের সুনামগঞ্জ-৩ আসন উন্নয়নে বদলে গেছে। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতার কারণেই আবারও বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ।