সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পত্রিকায় পুলিশ সুপারের ভাষ্য প্রকাশিত হয়েছে, তিনি বলেছেন, ‘একটি ঘর থেকে বন্দুক তিনটি জব্দ করা হয়েছে। বন্দুকগুলোর লাইসেন্স থাকলেও আমাদের সন্দেহ এগুলো ব্যবহার করছিল ভিন্ন এলাকার ভিন্ন লোক। যে কারণে এগুলো জব্দ করে আমরা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ এই প্রশাসনিক বক্তব্য খুবই সুস্পষ্ট ও তাৎপর্যময়। আমরা প্রশাসনকে এই তৎপরতার জন্যে ধন্যবাদ জানাই। আসলেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টির একটা সুরাহা হওয়া উচিৎ। প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা না নিলে দেশের ভেতর লাইসেন্সওয়ালা বন্দুকের অবৈধ ব্যবহার দেশের ভেতরে একধরণের অরাজকতা সৃষ্টি করবে এবং মনে হবে দেশে কোনও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের তৎপরতা নেই। এমনটা কোনও সচেতন নাগরিকেরই প্রত্যাশা নয়।
অস্ত্র লোকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অর্থাৎ ব্যক্তির জান ও মাল নিরাপদ রাখার জন্য। সরকার নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ব্যক্তি বিশেষকে বন্দুক রাখার অনুমোদন দিয়ে থাকেন। কিন্তু যখন কোনও ব্যক্তি তাঁর লাইসেন্সওয়ালা অস্ত্র টাকার বিনিময়ে কিংবা অন্য কোনও বৈষয়িক স্বার্থের বিনিময়ে অন্য কোনও ব্যক্তিকে এই অস্ত্র ব্যবহার করতে দেন তখন সেটা অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহারের পর্যায়ে পড়ে। সাধারণত বৈধ অস্ত্রের এইভাবে অবৈধ ব্যবহার কোনও না কোনও অবৈধ, বেআইনি কিংবা অন্যায় কাজেই ব্যবহার হয়ে থাকে। আটককৃত বন্দুক ব্যবহার হয়েছে একটি নতুন সৃষ্ট জলাশয় জবরদখল করে মাছ আহরণের কাজে। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সুন্দরপুর জলমহাল সংলগ্ন কালিবাড়ি বাঁধের পাশে কয়েক বছর আগে একটি জলমহালের সৃষ্টি হয়। ইজারাবিহীন এই জলমহাল ভোগ দখল করছিল স্থানীয় একটি চক্র। তারা অস্ত্র নিয়ে ওখানে নিয়মিত টহল দিতো। ভয় দেখিয়ে মৎস্যজীবীদের বিতাড়ন করতো।’ পত্রিকার এই বয়ানের পর বুঝতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না যে, আইনানুসারে সরকার যে-জলমহালের মালিক সরকারের অজান্তে সে-জলমহাল দখল করে নিয়ে একটি চক্র মাছ আহরণ করতে গিয়ে বৈধ বন্দুক ভাড়ায় নিয়ে এসে অবৈধ ব্যবহারের অপরাধ করেছে। বৈধ বন্দুকের এই অবৈধ ব্যবহারের ফলে এখানে বেশ কয়েকট অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এমন অপরাধ যাতে সংঘটিত না হয় সেজন্য প্রশাসনকে আরও তৎপর ও কঠোর হতে হবে। তানাহলে লাইসেন্সওয়ালা বন্দুকগুলো ভাড়ায় খাটানোর প্রবণতা বেড়ে গিয়ে দেশের আনচে কানাচে ব্যাপকাকারে অরাজকতা তৈরি করবে। দুর্বৃত্তরা কোথাও দখল করে নেবে সরকারি জলমহাল, কোথাও হবে ডাকাতি, কোথাও বা হবে খুন এবং প্রকারান্তরে সমাজের শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়ে পড়বে দুষ্কর।
এক শ্রেণির লোক চক্র তৈরি করে অরক্ষিত রাষ্ট্রীয় সম্পদ দখল করে নেয়। যেমন নতুন সৃষ্ট জরমহালটি দখল করে নেওয়া হয়েছে। এ প্রবণতা লোকসমাজে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য করা যায়। এই প্রবণতা দূরিকরণে যথাযথ কর্র্তপক্ষকে অবশ্যই তৎপর হবে এবং তৎপর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবংবিধ অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।