শহীদ নূর আহমেদ ::
হাওরের রাজধানী নামে খ্যাত সুনামগঞ্জের মাছ বাজারে দেশী মাছের অভাব দেখা দিয়েছে। দেশী মাছের পরিবর্তে চাষকৃত মাছ দিয়ে আমিষের চাহিদা মেটাচ্ছেন এখানকার মানুষরা। কারেন্ট জাল ও কোনা জাল দিয়ে অবাধে মা ও পোনা মাছ নিধন , বিল জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা ও বিষ বা কীটনাশক দিয়ে মাছ ধরায় দেশীয় মাছের দেখা মিলছে না বলে জানিয়েছেন মাছ ব্যবসায়ি ও মৎস্যজীবীসহ সচেতন মহল। মৎসীবীদের জালে কিছু দেশী মাছ ধরা পরলেও সেই মাছ স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না। অধিক মুনাফা লাভে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় মাছ রপ্তানি করেন কিছু ব্যবসায়িরা। ফলে স্থানীয় বাজার দখল করে রেখেছে চাষকৃত মাছ। জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাওর জলাশয়ে কয়েক’শ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো। যার মধ্যে, বোয়াল, রুই, চিতল, ঘাষকার্প, মৃগেল, কার্পু শোল, গজার, কার্লবাউশ. বাইম, কই, মাগুর, শিং, খলিশা, খাইক্কা, কাংলা, বেদা, কালো চিংড়ি, গুতুম, চাপিলা, বেদা, বালিগড়া, পুঁটি, টেংড়া, পাবদা, রাণীমাছ, গাগট, মলা মাছ অন্যতম। যার বেশির ভাগ মাছই আজ বিলুপ্তির পথে। এক সময় হাওর জলশয়ে প্রচুর পরিমান বড় বড় মাছ ধরা পড়তো। যা আজ শুধু অতীত গল্প। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের তহুর আলম জানান , আমরা ছোট বেলায় থাকতে যেই মাছ দেখছি এখনতো তা চোখেই পড়ে না। বাড়ির আশেপাশে হাওর জলাশয়ে বড় বড় মাছ ধরা যেতো। আর এখন দেশীয় মাছের অনেক প্রজাতির বিলুপ্তির পথে। যেই হারে মাছ নিধন হচ্ছে এক সময় মাছ চোখেই দেখা যাবে না। ৭০ বছরের উর্ধে মখদ্দুস আলী নামে আরেক ব্যক্তি জানান, এখন দেশী মাছের বড়ই অভাব। ছোট বেলায় যে বড় বড় মাছ দেখছি তা আজ শুধু গল্প। কোনা জাল আর কারেন্ট জালে সব শেষ। শুক্রবার সুনামগঞ্জ শহরের কিচেন মার্কেটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাছ বাজারে খুবই অল্প পরিমান দেশীয় মাছ উঠেছে। দেশীয় মাছের মূল্য অত্যধিক লক্ষ্য করা যায়। ফলে সাধারণ ক্রেতারা দেশীয় মাছ না কিনে পিসারীজ মাছ কিনতে বেশি স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করছেন । শহরের বাজারে পিসারীজ মাছে সয়লাব। দামও তুলনামুলক কম। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১২০ টাকা, সিলভার ১২০ টাকা, ঘাসকার্প ২২০ টাকা, কার্পু ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, কঁই ২০০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। তবে পাঙ্গাসের দাম কম হওয়ায় বেশি পাঙ্গাস কিনতে দেখা যায় সাধারণ ক্রেতাদের।
সুলেমান নামে এক ক্রেতা বলেন, দেশীয় মাছে মূল্যে আগুন। তাই বাধ্য হয়েই ১ কেজি পাঙ্গাস কিনেছি। পাঙ্গাসের দাম সবচেয়ে কম।
জমির আলী নামে এক পিসারীজ মাছ বিক্রেতা বলেন, দেশী মাছের দাম অনেক । তাছাড়া এখন দেশী মাছ তেমন একটা বেশি পাওয়া যায় না। তাই । তাই পিসারীজ মাছের দিকেই সাধারণ ক্রেতাদের নজর বেশি। আমরাও মাছ বিক্রি করে খুশি।