ছাতক প্রতিনিধি::
ছাতকে অনাবাদি জমি চাষের মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো হয়েছে। এখানে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার ও অনাবাদি জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার ফলে কৃষিতে দিন-দিন উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ছাতকে স্বাধীনতার পর থেকে এ বছর খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে চাহিদার ১২ মে.টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করা হয়েছে। ২০১৬ সালে এ উপজেলায় আউশের আওতায় জমির পরিমাণ ছিল ৩শ হেক্টর । বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২’শ হেক্টরে। গত ১০ বছরে এখানে ধানের উৎপাদন ১২৮ভাগ, গমের উৎপাদন ৫১৮ভাগ, গোল আলুর উৎপাদন ১৪৯ভাগ, সরিষার উৎপাদন ২৬০ভাগ ও গ্রীস্মকালীন সবজির উৎপাদন ২০০ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাতক উপজেলায় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখানে কৃষি বিভাগের প্রর্দশনী, সরকারী সার ও বীজ বিতরণ, কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যাহত রাখায় এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ অঞ্চলে আগে সরিষার আবাদ তেমন ছিল না। বর্তমানে উপজেলার ইসলামপুর, নোয়ারাই, দোলারবাজার ও ভাতগাঁও ইউনিয়নে প্রচুর পরিমান সরিষার আবাদ হচ্ছে। নোয়ারাই ইউনিয়নের মানিকপুরসহ এলাকায় লিচু চাষের পাশা-পাশি শীতকালীন শাক-সবজিরও আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ছাতকে উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, ব্র্রি-৭২, ব্রি-৬২, ব্রি-৭৪, বিনা-৭,বিনা-১০,বিনা-১৪ ধানের আবাদ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। সুনামগঞ্জে নন-ইউরিয়া সারের ব্যবহার কম ছিল। বর্তমানে কৃষকরা ইউরিয়া সারের পাশাপাশি নন-ইউরিয়া সার জমিতে ব্যবহার করছেন। দোলারবাজার ইউনিয়নের কৃষক আবু হানিফা জানান, তিনি ভুট্টার তিনটি প্রদর্শনী করে লাভবান হয়েছেন। এতে ভুট্টা চাষেও কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। সরকারি সহায়তা পেলে এখানে ভুট্টা চাষও বৃদ্ধি পাবে। উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, সিলেট অঞ্চলে ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ধানের নতুন জাতের প্রচলন ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এখানে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম বদরুল হক জানান, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের সহায়তা, কৃষির আধুনিক কলা-কৌশলসহ প্রশিক্ষণ এবং অনাবাদি জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসায় এখানে খাদ্য ও রবি-শস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের যোগপোযোগী সিদ্ধান্তের ফলে ৭০ভাগ ভর্তুকিতে ট্রাক্টর, ফসল কাটা, ধান মাড়াই, চারা রোপনসহ কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদের মধ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে কম শ্রমিকের মাধ্যমে চাষিদের দ্রুত ফসল লাগানো, মাড়াই ও ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে।