স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জ জেলা আ.লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বসেছিলেন এক মঞ্চে। কুশল বিনিময় করলেন, হাসিমুখে হাত মেলালেন। অনুষ্ঠান শুরু এবং শেষ হওয়ার পর দুই নেতাকেই হাসিমুখে দেখা যায়। দুই দলের দুই নেতার এমন আন্তরিকতায় উপস্থিত মানুষজনও তাদের প্রসংসা করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেশের জনপ্রিয় শীর্ষ সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের ‘নির্বাচন ২০১৮’ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের জেলার দুই শীর্ষ নেতা। মতিউর রহমান সুনামগঞ্জ-৪ আসন ও কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন সুনামগঞ্জ-৫ আসনের প্রতিনিধিত্ব করেন।
যমুনা টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপনের সঞ্চালনের নির্বাচন ভিত্তিক অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মনির উদ্দিন, নারী নেত্রী সঞ্চিতা চৌধুরী, সুজনের আঞ্চলিক সমন্বয়ক আব্দুল হালিম, শিক্ষার্থী ফারজিয়া হক ফারিন।
অনুষ্ঠানে মতিউর রহমান বলেন, রাজনৈতিক সহবস্থান একার ব্যাপার না, একা আ.লীগের ব্যাপার না, সবার সহযোগিতার দরকার। এই মুহূর্তে শেখ হাসিনার সরকার, নির্বাচন কমিশন চাচ্ছে, সবার সহযোগিতা, এখন যদি কেউ ইচ্ছা করে না আসে, অসহযোগিতা করে তা হলে রাজনৈতিক সহবস্থান হবে কিভাবে। আমার মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করছি, সারা দেশের মানুষের কল্যাণ করে যাচ্ছি। জেলার ৫টি আসনে আ.লীগ যে উন্নয়ন করেছে, তা অন্য কেউ করেনি। গণতন্ত্র রক্ষার জন্য গেলবার জাপাকে মহাজোটের অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জ-৪ আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। আগামীতে আমরা ছাড় দেব না, বিষয়টি আমার দলীয় নেত্রীর কাছে জানিয়েছি।
অন্যদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, আমাদের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে একথাটা সত্যি না, নির্বাচনের আর কিছু দিন বাকি আছে, কিন্তু সারা জেলায় আমরা ১৫টি গায়েবী মামলার জালে হাজার হাজার নেতাকর্মী আবদ্ধ, নেতাকর্মীরা জেল খাটছেন। হামলা, মামলা, জেলে দিয়ে সহবস্থান তৈরি করা যাবে না। তারা চাচ্ছেন সকল নিপীড়ন চালিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে। এই অবস্থা থেকে আমাদের পক্ষে সহযোগিতা করা সম্ভব না। তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনে বিএনপির অবস্থান খুব শক্তিশালী, আমার তো বলেছি নির্বাচনের আগে প্রতিবন্ধকতা আছে, সেটা যদি সড়ানো হয় তাহলে দল হয়তো নির্বাচনে যাবে। আমার আশা করি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি জয়ী হবে।
জাপার প্রতিনিধি মনির উদ্দিন বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে জাপার একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে, এখানে এই দলটি খুব জনপ্রিয়। বার বার এখান থেকে জাপার প্রার্থী জয়ী হয়েছে। বর্তমান সাংসদ দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। এককভাবে নির্বাচন করলেও আমার জয়ী হব।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, হাওরের দুর্নীতির মামলা চলমান আছে, আমার আশা করছি যারা জড়িত তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। সুনামগঞ্জ হল হাওরের রাজধানী, সংস্কৃতির রাজধানী, যদি হাওরই না থাকে তাহলে কৃষক বাঁচবে না। এজন্য আগামীর জনপ্রতিনিধিদের হাওরের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।