স্টাফ রিপোর্টার ::
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ এক হতদরিদ্র নারীকে (২৬) সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে তাকে কার্যালয়ের খাসকক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের আলাদা একটি কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। নারীটির আর্তচিৎকারে এলাকাবাসী ও পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী উপজেলা সদরে চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে তাকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে। শ্লীলতাহানির শিকার ওই নারী সন্ধ্যায় বিশ্বম্ভরপুর থানায় ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি।
জানা গেছে, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বাগগুয়া গ্রামের চার সন্তানের জননী এক দরিদ্র পরিবারের নারী মহিলা অধিদপ্তরের সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করেন। চূড়ান্ত তালিকায় প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণের অনুমোদন দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। ওই নারী তাকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সুযোগদানের জন্য বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ হারুনুর রশিদকে অনুরোধ জানান। গত কয়েকদিন ধরে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ। তাকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণসহ একটি সেলাই মেশিন দিবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। বুধবার তাকে আইডি কার্ড ও ছবি নিয়ে আসার কথা বললে দুপুরে ওই নারী চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি ওই নারীকে দোতলায় তার কার্যালয় লাগোয়া একটি খাস কক্ষে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। চেয়ারম্যানের অনুরোধে ওই নারী কক্ষে আসেন। কিছুক্ষণ পরে চেয়ারম্যানও ওই কক্ষে এসে দরোজা বন্ধ করে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ওই নারী। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক তার কার্যালয়ের খাসকক্ষে দরিদ্র নারী ধর্ষিত এই খবরটি টক অব দ্যা উপজেলায় পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের খাসকক্ষে একজন নারী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন এই খবরে স্থানীয় লোকজন দোতলায় জড়ো হন। এসময় এসআই আরিফও ছুটে এসে ওই নারীকে দোতলা থেকে উদ্ধার করেন। নির্যাতিত নারী উপস্থিত পুলিশ ও জনতার কাছে নির্যাতনের ঘটনা খুলে বলেন এবং তিনি ধর্ষিত হয়েছেন বলেও জানান। জনতার উপস্থিতি টের পেয়ে চেয়ারম্যান সুযোগে সটকে পড়েন বলে জানা গেছে। সন্ধ্যায় স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা চেয়ারম্যানের বিচার দাবি করে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
নির্যাতিত ওই নারী বলেন, আমাকে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষ হলে একটি সেলাই মেশিন দেবার কথা বলে কয়েকদিন ধরে ফোনে কথা বলছিলেন চেয়ারম্যান। আজ তার কথা মতো ছবি ও আইডি কার্ড নিয়ে আসার পর তার খাসকক্ষে ডেকে নিয়ে আমার সর্বনাশ করেছেন। আমি তার বিচার চাই।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন সংশোধনী ২০০৩ এর ৯ (১) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিশ্বম্ভরপুর থানার মামলা নং ২০। ভিকটিমকে মেডিকেল চেকআপের জন্য পাঠিয়েছি।
অভিযুক্ত বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদের মোবাইল ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।