1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মৃত্যুর আগে টাকা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করুন

  • আপডেট সময় শনিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

‘তবে বেশিরভাগ মানুষই মৃত্যুর পর সহায়তার চেক পেয়ে থাকে।’ প্রশ্ন হলো এই চেক কীসের। উত্তরে বলা যাবে, ক্যানসার, কিডনিরোগ, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইসিস, হৃদরোগ ইত্যাদি জটিল রোগগ্রস্ত রোগী যারা অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারে না তারা যাতে চিকিৎসা পায় সরকার সে-ব্যবস্থা করেছেন এবং এই ব্যবস্থার অধীনে রোগীরা অর্থ সহায়তার চেক পেয়ে থাকেন। এ ব্যবস্থা দেশে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে চালু আছে। কিন্তু বলা হচ্ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ব্যবস্থাটি পুরোপুরি কার্যকর হচ্ছে না, বরং মুখ থুবড়ে পড়েছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে মন্ত্রণালয়ে যেসব আবেদন যায় সেগুলো অনুমোদিত হয়ে আসতে আসতে এতোটই কালক্ষেপণ হয়ে যায় যে, ইত্যোবসরে রোগীরা অপেক্ষায় অটল থাকতে না পেরে শেষ পর্যন্ত পটল তোলেন। টাকার চেক আসে, যে-টাকা বরাদ্দের উদ্দেশ্য ছিল রোগীর রোগ নিরাময়ার্থে চিকিৎসা ব্যয় চালানো, কিন্তু সে চেকের উত্তরাধিকার নির্ণয় নিয়ে শুরু হয় নতুন আমলাতান্ত্রিকতা।
দৈনিক সুনামকণ্ঠের সংবাদে লেখা হয়েছে, ‘জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে সহায়তা আবেদনকারীদের ২২টি চেক এসেছিল। এর মধ্যে ২০ জনই মারা গিয়েছিলেন।’ কার্যক্ষেত্রে বাস্তব অবস্থা যদি এই হয় তবে, যে-কেউ বলতেই পারেন যে, সরকারের জটিল রোগীদের অর্থসহায়তা প্রদানের এই জনহিতকর প্রকল্পটির আদর্শ ও উদ্দেশ্য আসলে জীবিত রোগেীদেরকে চেক প্রদান না করে ‘মৃত রোগী’দের চেক প্রদান করার একটি পদ্ধতিতে পর্যবশিত হয়েছে। মন্ত্রণালয় রোগগ্রস্ততার খবর রাখেন কিন্তু রোগে মৃত্যুর খবর রাখেন না। এতে করে মনে হতেই পারে, দেশে জটিল রোগীদের অর্থসহায়তার প্রদানের পদ্ধতিটি আসলেই ভীষণ জটিল। এতোটাই জটিল যে, রোগী মারা যাবার পরে রোগী থাকে কি না, এই রকম একটি প্রশ্নের সম্মুখে মানুষকে দাঁড় করিয়ে দেয় এবং এই ধাঁধার উত্তর মেলাতে মেলাতে জীবন আরও জটিল হয়ে পড়ে। কারণ চেকটা পাঠানোর উদ্দেশ্য রোগীর চিকিৎসার খরচ নির্বাহ, তো রোগী মারা যাওয়ার পর আসলে এই টাকার ব্যবহার কোন্ রোগীর চিকিৎসার্থে ব্যবহার করা হবে? চেকটা কী শেষ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ হিসেবে পরিগণিত হয়ে পড়ে? এখানে একধরনের উদ্দেশ্যচ্যুতি কি ঘটছে না? যুক্তি কী বলে? সরকারের তো উদ্দেশ্য ছিল রোগীর চিকিৎসা, রোগীর উত্তরাধিকারীকে চেক প্রদান নয়।
সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মপদ্ধতিকে এইভাবে ‘জটিলতার’ ফাঁদে আটকে জনগণের সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়টিকে লটকে দেওয়ার কোনও মানে হয় না। রোগীদেরকে সহজভাবে এবং মরার আগে চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কোনও উপায় নেই এটা হতেই পারে না। নিশ্চয়ই আছে। সমস্যা আছে অথচ সমাধান নেই এটা কী করে হয়? সমস্যা যেখানে সমাধানও সেখানে। কথা না বাড়িয়ে, আপাতত কেবল এইটুকু বলি, কথিত ‘জটিলতা’ থেকে বেরিয়ে আসুন, মৃত্যুর আগে টাকা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করুন।
পরামর্শ দিতে চাই না। পরামর্শ সক্রেটিসও দিয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর পরামর্শ যথার্থ হওয়া সাত্ত্বেও কর্তৃত্বের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। সেটা শুনা হয়নি। ইতিহাস সাক্ষী। সুতরাং যে-কর্তৃত্ব জটিলতার ¯্রষ্টা তাকেই জটিলতার বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে। আপাতত এর কোনও বিকল্প নেই।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com