1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মহররমের তাৎপর্য ও পবিত্র আশুরা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮


মাও. কাজী শাহেদ আলী ::

আরবী হিজরী সনের প্রথম মাস হল শাহরে মুহররম। অর্থাৎ সম্মানিত মাস। যুদ্ধ বিগ্রহ, রক্তপাত এই মাসে হারাম করা হয়েছে। এ জন্যই এ মাসকে মহররম মাস বলা হয়। আল্লাহ তায়ালার নিকট চারটি মাস সম্মানিত তন্মেধ্যে মুহররম মাস অন্যতম। এই মাসের ১০ তারিখে মহাসম্মানিত আশুরার দিন। নিষিদ্ধ ও গোনাহের কার্য সমূহকে পরিত্যাগ করে দিবসটিকে ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করা আমাদের আবশ্যক। সর্ব প্রকার নিন্দনীয় ও সমাজে প্রচলিত খারাপ কাজ আতশবাজি, চাকু, সুঁই, তীর নিয়ে অহেতুক মাতুম গাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন।
হযরত আবু মুসা আশয়ারী (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, খায়বারের লোকেরা আশুরার দিন রোজা রাখত, তারা এদিনকে ঈদের দিন (উৎসবের দিন) হিসেবে গ্রহণ করত এবং তাদের মহিলাদেরকে অলংকার সজ্জিত করত এবং সৌন্দর্যের পোশাক পরিধান করাতো। এ কথা শুনে রাসুলে পাক (সা.) এরশাদ করেন তোমরাও এদিনে রোজা রাখো। হযরত হাকিম ইবনে আব্বাছ (রা.)-এর নিকট পৌঁছলাম এমতাবস্থায় তিনি জমজম কূপের নিকট চাদর বিছিয়ে বসা ছিলেন। অতঃপর আমি তাকে বললাম আপনি আমাকে আশুরার দিনের রোজা সম্পর্কে বলুন। তিনি বললেন, তুমি যখন মুহররম মাসের চাঁদ দেখবে তখন তার দিনগুলো গণনা করতে থাকবে এবং নবম দিবসে রোজা অবস্থায় ভোর করবে। এ কথা শুনে আমি তাকে বললাম, হুজুর পাক (সা.) কি এদিনে রোজা রাখতেন? তিনি বললেন হা্যঁ। (মুসলিম শরীফ)।
মুহররমের ৯ ও ১০ তারিখের রোজা ২ (দুই) দিন রাখা উত্তম। মুহররম মাস একটি সম্মানিত মাস। সম্মানিত চার মাসে যদি কেহ বিশেষভাবে ইবাদত বন্দেগী করে তবে বাকি আট মাস ইবাদতের খাস হিম্মত ও শক্তিদান আল্লাহ তায়ালা তাহাকে দান করবেন। এ মাসে তাওবা নামক মহাগুণটি মজবুত করে ধরে রাখলে আল্লাহ তায়ালা তাহাকে আশুরার উছিলায় গোনাহগুলি মাফ করে দিবেন।
আশুরার ফজিলত লিখে শেষ করা যায় না। মহররম-এর ১০ তারিখের ঘটনাগুলো ঐতিহাসিক ও রহস্যময়। এক কথায় ঐ তারিখে আল্লাহপাক পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন রহমতের বৃষ্টি হয়েছে এবং পাহাড় পর্বত নদী নালা, জান্নাত, জাহান্নাম লওহে মাহফুজ ও যাবতীয় সৃষ্টি জীবের আত্মা সৃজন করেছেন।
রাসুলে পাকের হাদীস শরীফ থেকে জানা যায় যে, মহররমের ১০ তারিখ রোজ শুক্রবার দিন মহাপ্রলয় কিয়ামত অনুষ্ঠিত হইবে। আশুরার দিনে হযরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয় এবং বেহেস্তে প্রবেশ ও পৃথিবীতে প্রেরণ ও তাওবা কবুল হয় এই দিনেই।
হযরত নুহ (আ.)-এর কিস্তি পাহাড়ে অবতরণ ও হযরত ইব্রাহিম (আ.) বিশাল অগ্নিকু- থেকে মুক্তিলাভ এবং হযরত মুসা (আ.) নীল দরিয়া পার ও ফেরাউনের অনুসারীগণ নীলনদের গর্ভে বিলীন হয় ওই তারিখে।
হযরত ইউনুছ (আ.) মাছের পেট থেকে নাজাত ও হযরত আয়ুব (আ.)-এর শরীর থেকে পোকার কামড় বিরত ও শরীর সুস্থ হয়েছিলেন ঠিক ঐ ১০ তারিখেই।
সবচেয়ে হৃদয় বিদারক ঘটনা হলো মহররমের ১০ তারিখে রাসুল (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)সহ নবী পরিবারের বহু সদস্য ও সাথীবর্গসহ মোট ৭২ জন শাহাদাত বরণ করেন। ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঐদিনেই ঘটেছিল। সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই জান ও মাল কোরবানের কারণ।
আশুরায় আমাদিগকে সত্য পথে চলার অটল ও অবিচল থাকার ত্যাগ স্বীকার করার শিক্ষা দেয়।
ওই দিনে তাছবিহ তাহলিল, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরীফ, মিলাদ শরীফ, দান ছদকা, খয়রাত, পরিবার-পরিজনের মধ্যে উত্তম খাবার ব্যবস্থা করে দুনিয়া ও আখেরাতের মঙ্গল কামনা করা উচিত।
আল্লাহপাক সকল মুমিন মুসলমানগণকে ইসলামী সনের প্রথম মাসে আশুরার দিনকে উছিলা করে উহার ফজিলত ও বরকত দানসহ সত্য পথে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন। ছুম্মা আমিন।
[লেখক : মাওলানা কাজী মো. শাহেদ আলী, সাবেক সুপার (স্বর্ণ পদকপ্রাপ্ত)]

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com