স্টাফ রিপোর্টার ::
জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের মাতারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে গত ১৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও গ্রামবাসী। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাতারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম সারোয়ার নিয়মিত বিদ্যালয়ে যান না। তিনি উপজেলা সদরে অবস্থান করে নিজের একাধিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনৈতিক কর্মকা- নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। প্রতিমাসে একদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর করে আসেন। বিদ্যালয়ে না গিয়েই তিনি মাসে মাসে সরকারি বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন বছরের পর বছর ধরে। উপজেলা সদরে তার বাড়ি থাকায় ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র জামালগঞ্জ উপজেলা শাখার যুগ্ম-সাধারণ স¤পাদক হওয়ার সুবাদে অনেকটা প্রভাব বিস্তার করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের পদে থেকেও লাগাতার বিদ্যালয়ে না গিয়েই বেতন-ভাতা ভোগ করে যাচ্ছেন।
এদিকে, প্রধান শিক্ষক স্বয়ং স্কুলে না যাওয়ায় সহকারি শিক্ষকরাও এর সুযোগ নিয়ে প্রতিদিনের নির্ধারিত সময়ের বিলম্বে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। যে কারণে এর প্রভাব পড়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে। মুখ থুবড়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যবস্থা। এতে শিক্ষার গুণগত মান ক্রমশঃ নি¤œমুখী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নামে ‘পকেট কমিটি’ গঠন নিয়েও তিনি ধূ¤্রজাল সৃষ্টি করে রেখেছেন। দুই বছর ধরে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন খাতে যে সব সরকারি অনুদান আসে তা কোনখাতে কত ব্যয় করেন তাও কেউ অবগত নন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাতারগাঁও গ্রামের লোকজন জানান, প্রধান শিক্ষক গোলাম সারোয়ারকে দুই বছর ধরে কেউই নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে দেখেননি। মাসে একদিন কিছুক্ষণের জন্য এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেই চলে যান।
গ্রামের বিপুল তালুকদার জানান, এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসে বারবার অভিযোগ করেও কোন কাজ হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ প্রধান শিক্ষকের উপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক গোলাম সারোয়ার বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নই। আমার কোনো ব্যবসা-বাণিজ্যও নেই। প্রধান শিক্ষকদের অফিসিয়াল কিছু কর্মকা- থাকে, সপ্তাহে একদিন বা মাসে দুই-চার-পাঁচদিন। এ জন্য ওইদিনগুলোতে বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ তদন্ত করে দেখব। যাচাই-বাছাই হবে। তারপর যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় সেক্ষেত্রে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।