দেশের প্রত্যন্ত জেলা সুনামগঞ্জ। আর্থনীতিক অবকাঠামো এখনও অনেকটাই পিছিয়ে পড়া, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায়। বিশেষ করে যোগাযোগ অবকাঠামোর পশ্চাদপদতার কারণে এখনে উন্নয়নের গতি খুবই মন্থর। গত কয়েক বছর আগে এখানে সুরমা নদীর উপর আব্দুজ জহুর সেতু তৈরির ফলে সম্ভাবনার আলো ‘ক্রমে আসিতেছে’ বলা যায়। এর বেশি নয়। কিন্তু সম্পদাঢ্যতার দিক থেকে সুনামগঞ্জ দেশের অন্য যে-কোনও জেলার চেয়ে এগিয়ে আছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতির জন্যে যে-সব ভৌত অবকাঠামো দরকার পড়ে সুনামগঞ্জে সেগুলো এখনও তেমনভাবে গড়ে উঠেনি। সুনামগঞ্জের ধান, মাছ, বালু, পাথর, সবজি ইত্যাদি দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সহজে ও দ্রুত চালান করার জন্য যে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা দরকার সেটা এখনও প্রত্যাশিত আকারে এখানে প্রলম্বিত হয়নি। উন্নয়নের স্পর্শবঞ্চিত সুনামগঞ্জে এখনও বেশ কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে ভালো কোনও যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে উঠেনি। এখান থেকে সড়ক পথে ঢাকা যেতে এখনও কম করে ছয় ঘণ্টার অধিক সময় লাগে। রেল আসবে বলে কেউ কেউ আশার আলো দেখাচ্ছেন এবং আমরা আশ্বাসবাণী শুনে তৃপ্তিবোধ করছি। কিন্তু রেলপথের বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঢাকার সঙ্গে দূরত্বটা কমিয়ে আনার জন্য নতুন, উন্নত ও আধুনিক সড়ক যোগাযোগ চাই।
এই সব পশ্চাদপদতার সঙ্গে সুনামগঞ্জের উন্নয়নের সঙ্গে একটি শুল্ক স্টেশনের জল্পনা হচ্ছে। মাঝে মাঝেই। খুবই আশার কথা। হলে খুবই ভালো হয়।
গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি লেখার শিরোনাম ছিল, “সুনামগঞ্জে শুল্ক স্টেশন হবে কবে?” সত্যি আমাদের সুনামগঞ্জের একটি শুল্ক স্টেশন চাই। এই শুল্ক স্টেশনটি ভারতের সেভেন সিস্টার নামের সাত রাজ্যের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে সুনামগঞ্জকে তথা বাংলাদেশকে। সেটা হলে সুনামগঞ্জের জন্য উন্নয়নের অন্য দুয়ার খোলে যেতে পারে। তা মন্দ হবে না। এই শুল্ক স্টেশন সুনামগঞ্জের উন্নয়নে একটি আলগা গতি সঞ্চার করবে বলেও কেউ কেউ মনে করেন। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে এ ব্যাপারে জোর তৎপরতা দাবি করছি।