দিরাই প্রতিনিধি ::
আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে দুই পক্ষের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন পরস্থিতিতে একপক্ষটি পক্ষ আরেকপক্ষের লোকজনের ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন সালিশ বৈঠক করেও বিরোধের সমাধান দিতে পারেননি।
জানাযায়, গত শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে স্থানীয় ভাটিপাড়া বাজারে ইউপি সদস্য রুহেল তালুকদার ও শিশির নুরের মাঝে কথা কাটাকাটির জের ধরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ও পুলিশের সহায়তায় বিরোধ নিষ্পতির জন্য গত সোমবার ভাটিপাড়া বাজারে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্যরা উপস্থিত হলেও সালিশ বৈঠক চলার মধ্যেই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হলে বৈঠক প- হয়ে যায়। এ সময় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সবাই নিরাপদ স্থানে চলে যান।
এ ব্যাপারে ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নবেন্দু রঞ্জন রায় বলেন, নয়াহাটি এবং বাজার হাটির লোকজনের মধ্যে ঝগড়ার পর থেকে নয়াহাটির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছেনা। নয়াহাটির অভিভাবকরা আমাদের ফোন করে জানান, বাজার হাটির লোকজন শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাধা দিচ্ছেন।
একই কথা বললেন ভাটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুর রহমান। তিনি বলেন, কয়েক মাস পর সমাপনী পরীক্ষা। আমরা সমাপনী পরীক্ষার্থীদের সন্ধ্যায়ও ক্লাস নেই। দু’পক্ষের বিরোধের পর থেকে নয়াহাটির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছেনা।
ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য এলাকার সালিশ ব্যক্তিত্ব তালুকদার শাহ আলম বলেন, ঝগড়ার পর থেকে আমাদের হাটির শিক্ষার্থীদের প্রথম দুই দিন বাজার হাটির লোকজন বিদ্যালয়ে যেতে বাধা দেয়। বিষয়টি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তারা রাস্তায় দপ্তরি বসিয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও প্রতিদিন দু’পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যার কারণে বাচ্চারা বিদ্যালয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে। আমাদের হাটির লোকজনকে বাজারে যেতে বাধা দিচ্ছেন বাজার হাটির লোকেরা।
ভাটিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তালুকদার মাহবুবুল আলম বলেন, আমাদের বাজারে ফরতিদিন মাইর হয়। বাজার দিয়ে স্কুলে যেতে ভয় হয়। মারামারির পর প্রথম দুই দিন বাজার হাটির লোকজন আমাদের বিদ্যালয় যেতে বাধা দেন। আমি আব্বুকে বলেছি ওই স্কুলে যেতে আমার ভয় হয়।
ভাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান কাজী বলেন, সোমবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, দিরাই থানার ওসিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেও আমরা সফল হতে পারিনি। তবুও হাল ছাড়িনি। কয়েক দিনের মধ্যে আমরা আবার উভয়পক্ষকে নিয়ে বসব। তিনি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে বাঁধার অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, তাদের অভিযোগ আমি খতিয়ে দেখেছি এর কোনো সত্যতা পাইনি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার বলেন, সোমবার আমরা সালিশ বৈঠকে বসেছিলাম, সমাধান হয়নি। কয়েকদিনের মধ্যে আবার বসবো।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফা কামাল বলেন, জনপ্রতিনিধি, রাজনীনিতিবিদ পুলিশ প্রশাসনসহ সালিশ বৈঠক হয়েছে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে।