1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

ব্লু হোয়েল-মমো-গ্র্যানি খেলা নিষিদ্ধ করলো পুলিশ

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বাংলাদেশে প্রাণঘাতী ব্লু-হোয়েল, মোমো ও গ্র্যানি গেম খেলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ইউনিট। এই তিনটির কোনো একটি গেম খেললে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জব্দ করা হবে তার মোবাইল ফোনসহ যাবতীয় জিনিসপত্র।
পুলিশের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম সাইবার ইউনিটের এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এই গেমগুলো গেইমার এবং তার পরিবারের জন্য প্রাণঘাতী। গেমগুলো তরুণ সমাজকে হতাশাগ্রস্ত ও মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। এই বিবেচনায় বাংলাদেশে গেমগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট। ভারত-পাকিস্তানেও এই ৩টি গেম নিষিদ্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই ৩টি গেমের কোনো একটি খেলছে, এমন কাউকে যদি শনাক্ত করা হয় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া আমরা দেশবাসীকে অনুরোধ করছি- যদি তাদের আশেপাশের কেউ এই গেমটি খেলে তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে তাদের বিষয়ে তথ্য দিন। তবে বাংলাদেশে প্রাণঘাতী এসব গেমের কোনো লিংক বা গেম খেলছে এমন কাউকে সনাক্ত করা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
ব্লেড দিয়ে হাত কেটে তিমি মাছ আঁকা আর আত্মহত্যার মতো পরিণতির গেম ব্লু হোয়েল ২০১৭ সালের শুরুর দিকে ভারত-চীনসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ব্লু হোয়েল গেমে অনলাইনে একটি কমিউনিটি তৈরি করে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে মোট ৫০টি ধাপ থাকে। ধাপগুলো খেলার জন্য ওই কমিউনিটির অ্যাডমিন বা পরিচালক খেলতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ দিয়ে থাকে। প্রতিযোগী সে চ্যালেঞ্জ পূরণ করে তার ছবি আপলোড করে। শুরুতে মোটামুটি সহজ এবং কিছুটা চ্যালেঞ্জিং কাজ দেয়া হয়। যেমন- মধ্যরাতে ভূতের সিনেমা দেখা, খুব সকালে ছাদের কিনারা দিয়ে হাঁটা, ব্লেড দিয়ে হাতে তিমির ছবি আঁকা ইত্যাদি। ধাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কঠিন ও মারাত্মক সব চ্যালেঞ্জ দেয় পরিচালক। যেগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ এবং সর্বশেষ ধাপ হলো আত্মহত্যা করা। অর্থাৎ গেম শেষ করতে হলে প্রতিযোগীকে আত্মহত্যা করতে হবে।
শুরুতে তুলনামূলক সহজ এবং সাহস আছে কিনা- এমন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ায় তরুণ-তরুণীরা আকৃষ্ট হয়। একবার এ খেলায় ঢুকে পড়লে বের হয়ে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এমনকি খেলার মাঝপথে চলে আসতে চাইলে প্রতিযোগীকে ব্লাকমেইল করা হয়। এছাড়া তার আপনজনদের ক্ষতি করার হুমকিও দেয়া হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক কথা হচ্ছে- গেমটি একবার মুঠোফোনে ব্যবহারের পর তা আর ডিলিট করা যায় না।
বাংলাদেশে এই গেম খেলে এমন দুজনকে সনাক্ত করে রিহ্যাবিলিটেশন করা হয়েছে। এর ভয়াবহতার বিষয়টি মাথায় রেখে বাংলাদেশে ব্লু হোয়েলের সব লিংক বন্ধের নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
পারিবারিক সচেতনতার মাধ্যমে বাংলাদেশকে ব্লু-হোয়েল মুক্ত করার সময় নতুন আরেক মরণফাঁদ তৈরি হলো। নতুন এই ফাঁদের নাম ‘মোমো চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেম’। এই গেম ছড়িয়ে পড়ছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে।
‘মোমো’ একটি মেয়ের ছবি। যার দু’টি চোখ কোটর থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসছে। তার পা দু’টি পাখির মতো। পায়ের আঙুল ও নখগুলো বড় বড়। মুখ অসম্ভব রকমের চওড়া। মাথা লম্বা। চুল ঘন কালো। দুই কানের পাশ দিয়ে তা অনেক নিচু পর্যন্ত নেমেছে। মাথার ওপরের দিকটা দেখলে মনে হবে, টাক আছে। তারই মাঝে কিছুটা জায়গা ছেড়ে ছেড়ে রয়েছে চুল।
মোমোর এই ছবি এঁকেছিলেন জাপানি শিল্পী মিদোরি হায়াশি। তবে শিল্পী হায়াশি কোনোভাবেই এই আত্মহত্যায় প্ররোচন দেয়া গেমের সঙ্গে জড়িত নন। ২০১৬ সালে টোকিওর ‘ভ্যানিলা গ্যালারি’তে একটি শিল্প প্রদর্শনীর জন্যই ওই ‘মোমো’র ছবি এঁকেছিলেন হায়াশি। নতুন এই গেমের ফাঁদে পড়ে ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনার ১২ বছরের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।
এ বছর ‘মোমো’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা হয়েছে ল্যাটিন আমেরিকায়। তবে হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেঞ্জারের মাধ্যমে এর মধ্যেই গেমটি পৌঁছে গেছে এশিয়া, আফ্রিকা আর ইউরোপে। ভারতে অনেকেই এই গেমে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছে গিয়েও ফিরে এসেছেন।
তবে এই দুই গেমকে ছাপিয়ে আগস্টের শেষের দিকে গ্র্যানি নামের নতুন গেমটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি ভারতের ময়নাগুড়ির তিন স্কুলছাত্র রাতে হঠাৎ করেই অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। কেউ আত্মহত্যার চেষ্টা করে, আবার কেউ পরিবারের লোকজনকে মারধর করে। এরপর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও মোবাইল ফোন জব্দের পর পুলিশের সাইবার ইউনিট গ্র্যানি গেমের বিষয়ে জানতে পারে।
ভারত পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞরা তদন্তের পর প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, গ্র্যানি নামের এই গেমটি মোমো বা ব্লু হোয়েলের মতো লিংক নির্ভর নয়। গেমটি মূলত ভয়ের। এই গেমের বিভিন্ন ধাপে রক্ত, ভূত বিভিন্ন রকম হিংসার ঘটনা রয়েছে।
এছাড়াও যারা ব্লু-হোয়েল ও মোমো’র শেষ পর্যন্ত যেতো তারা আত্মহত্যা করতো কিংবা আত্মহত্যা চেষ্টা করতো। তবে গ্র্যানি গেমের মাধ্যমে পরিবারের লোকজনকে মারধর হত্যার মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করছে ভারতীয় পুলিশ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com