স্টাফ রিপোর্টার ::
সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী জয়কলস ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. রাহেল মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের পর তার স্বজনদের বিরুদ্ধে গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনায় পাল্টা মামলা দায়ের করেছে সিলেট সুনামগঞ্জ ছাতক দিরাই বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপ। মামলায় নিহত রাহেলের মামাতো ভাই ইতালিপ্রবাসীসহ ১২জনকে আসামি করা হয়েছে। তাছাড়া নিহতের মামা সদর হাসপাতালে লাশ শনাক্তকরণে অবস্থান করার পরও তাকেও আসামি করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩০ আগস্ট দিরাই থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী বাসের (সিলেট জ ০৪-০১৮৩) চাপায় ঘটনাস্থল গাজীনগরেই দুপুর দেড়টায় মারা যান রাহেল। এই খবরে এলাকার ক্ষুব্ধ জনতা ওই গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। পুলিশও গত ২ সেপ্টেম্বর সার্কিট হাউসে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে গাড়িটি উত্তেজিত জনতা জ্বালিয়েছে বলে জানায়। এ ঘটনায় ২ সেপ্টেম্বর গাড়ির চালক আলা উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা আরো দুইজনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই সাজমান। এদিকে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে গত ২ সেপ্টেম্বর পরিবহন মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকার পর গত ৩ সেপ্টেম্বর নিহতের বড় ভাই সাজমান, ছোট ভাই রুবেল, সুজন, মামা ওবায়দুর রহমান কুবাদ, মামা হানিফ উল্লাহ, এবাদুর রহমান, মামাতো ভাই তোফাজ্জল, টিপু, মামুন, আজিজুল, জহিরসহ ১২জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সিলেট সুনামগঞ্জ ছাতক দিরাই বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের ম্যানেজার রবিউল হোসেন। মামলার এজাহারে বিকাল ৩টায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হলেও দুই নং আসামি জেলা মুক্তিযোদ্ধা যুবকমান্ড সভাপতি ওবায়দুর রহমান কুবাদ বেলা আড়াইটায় সদর হাসপাতালে ছিলেন। ২.৫৫ মিনিটে তিনি হাসপাতালের রেজিস্টারে লাশ শনাক্ত করেন। নিহতের অপর মামাতো ভাই তোফায়েলকে ৬নং আসামি করা হলেও গত ১১ বছর ধরে তিনি ইতালিতে অবস্থান করছেন। এভাবে নির্মমভাবে গাড়িচাপায় মারা যাবার পরও নিহতের স্বজনদের উপর মামলার ঘটনায় হতাশ হয়েছেন এলাকাবাসী। তাছাড়া এলাকায় না থেকেও অনেককে আসামি করায়ও মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। মামলাকারী নিহতের স্বজনদের বিরুদ্ধে লুটপাটেরও অভিযোগ আনেন।
সিলেট সুনামগঞ্জ ছাতক দিরাই বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের ম্যানেজার ও মামলার বাদী রবিউল হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মামলার ২ নং আসামি ওবায়দুর রহমান কুবাদ বলেন, মামলার এজাহারে বাদী যে সময় উল্লেখ করেছেন তখন আমি হাসপাতালে ছিলাম। হাসপাতালে লাশ শনাক্তের রেজিস্টারেও সেটি লিপিবদ্ধ আছে। তাছাড়া বেপরোয়া বাস চালক আমার ভাগ্নাকে গাড়িচাপায় হত্যার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গাড়িতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এখন নিহতের তিন ভাইসহ আমাকেও আসামি করা হয়েছে। আমার এক ভাতিজাকে আসামি করা হয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে বসবাস করছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাহেল মিয়া নিহতের ঘটনায় তার স্বজনরা মামলা করেছেন। পরে পরিবহন শ্রমিকরাও পাল্টা মামলা করেছে। নিরপরাধ ব্যক্তিকে যাতে অভিযুক্ত না করা সে বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখা হবে।