গত সোমবার বিকেলে (২৭ আগস্ট ২০১৮) দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। কাজ দেখে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলে গতকালের দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক সংবাদ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘শান্তিগঞ্জ বাজারস্থ ভবনের নি¤œমানের নির্মাণকাজ দেখে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।’ তাঁর এই জনহিতকর কর্মতৎপরতাকে সাধুবাদ জানাই।
এইরূপ উন্নয়নমূলক কাজে এরকম ‘অসন্তোষ প্রকাশ’ এর আগেও অনেকেই করেছেন এবং দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে থাকা সময়ে এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক, বরং না হওয়াটা অস্বাভাবিক বলে পরিগণিত হতে পারে। নির্মাণকাজে এরকম অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে তার অসংখ্য উদাহরণ দেওয়া সম্ভব। হয়তো কোন সেতু নির্মাণের মাস দুয়েকের মাথায় এমনিতেই সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেলো। তারপর আবার সেখানে নতুন করে একটি সেতু নির্মিত হলো। কিন্তু পূর্বের ধ্বসে পড়া সেতুর নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কিংবা প্রকৌশলীর প্রতি কোনও দাপ্তরিক কিংবা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এমন পরিলক্ষিত হয়নি কিংবা কোনওরূপ প্রতিবিধান হয়েছে বলে জানা যায়নি।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে নির্মাণাধীন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হতেই পারে। সে-কাজ পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক ‘অসন্তোষ প্রকাশ’ করতেই পারেন। এসব কোনও বড় কথা নয়। ‘অসন্তোষ প্রকাশ’ করাতে পরবর্তীতে সে-কাজের যথাযথ মানোন্নয়ন হয়েছে কি না, অদূর অতীতে দেশ ও জনগণ যে-ক্ষতির সম্মুখীন হবেন তা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে কি না, না কোনও রহস্যময় কারণে অনিয়মই নিয়মে পর্যবশিত হয়ে গেছে, সেটাই আসল কথা। জেলা প্রশাসকদের মধ্যে যাঁরা জনহিতকর কাজে বেশি বেশি নাক গলান তাঁদেরকে বিশেষ বিশেষ মহল নাপছন্দ করেন এবং এইরূপ কর্মদক্ষ জনহিতৈষী প্রশাসকদেরকে অচিরেই অসময়ে বদলি হয়ে যেতেও দেখা যায়। এতে করে প্রকৃতপ্রস্তাবে ও সার্বিক বিবেচনায় জেলার উন্নয়নকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিষয়টি নিয়ে আর বেশি কীছু আপাতত বলতে চাই না এবং বলাটাও বোধ করি খুব একটা শোভনীয় কীছু একটা হবে বলে মনে হয় না। কেবল বলি, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের কাজে যদি অনিয়ম-দুর্নীতি করা সম্ভব হয়, তবে অন্য কোনও ক্ষেত্রে দুর্নীতি করা তো খুবই সহজ ব্যাপার। আমরা আশা করবো, নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।